।।। সালাম নিয়ে কিছু কালাম ।।। - উস্তায আব্দুল্লাহ আল মাসউদ


ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলাম। সিএনজি থেকে নেমে হাঁটছি। 
বাজার পার হয়ে একটু সামনে বাড়তেই গ্রামের শুভ্রদাড়ির একজন মুরুব্বি সামনে পড়লেন। তাকে সহাস্যমুখে সালাম দিলাম,
- আসসালামুআলাইকুম
- ওয়ালাইকুমুসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। 
 
তার উত্তর নিয়ে পরে আবার পাল্টা সালাম দেওয়া দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। উত্তর দিবো কি দিবো না ভাবতে ভাবতেই তিনি আমাকে পেছনে ফেলে সামনে চলে গেলেন। আমি কিছু না বলেই আবার হাঁটা শুরু করলাম। 
 
বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে যোহরের নামাজ আদায় করলাম। তারপর খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে শরীরটা এলিয়ে দিলাম খাটে। এবার একটু বিশ্রাম করা যাক। বিশ্রামের সময়টাতে যতোক্ষণ না ঘুমঘুম ভাব না আসে, ততোক্ষণ সাধারণত কোন লেকচার শুনতে থাকি। ল্যাপটপটা ওপেন করে একটা লেকচার প্লে করলাম। ইয়ারফোন কানে গুঁজে চোখ বন্ধ করে বালিশে মাথা ঠেকালাম।
 
লেকচারার একজন উর্দুভাষী। তিনি ডালাসে এসে কথা শুরু করলেন এভাবে,
- ইস স্টেজ পর মউজুদ মেরে হারদিল আযীয দোস্ত, আওর ইস নিশাস্ত কা নাজেমে জলসা, আওর ইস মেহফিল মে মউজুদ মেরি ওয়ালিদ সাব কা, দীগর বুযুর্গুঁকা, তামাম ভায়ুঁ কা আর বেহনুঁ কা, ম্যায় ইসলামী তরীকে সে ইস্তেকবাল করতাহুঁ- আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু!
এখানেও সালামের অপপ্রয়োগ হলো। আর শুনতে মন চাইলো না। লেকচারটা অফ করে কান থেকে ইয়ারফোনটা খুলে নিলাম। 
 
এর কয়েকদিন দিন পরের ঘটনা। একজন প্রকাশক তাদের নতুন বই প্রকাশ উপলক্ষে লাইভে এসেছেন। তিনি আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে কথা শুরু করলেন এভাবে-
'দেশেবিদেশে অবস্থান রত অমুক পাবলিকেশন্সের সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, শুভানুধ্যায়ীবৃন্দ, লেখকবৃন্দ এবং আরো যারা আমাদের ভালোবাসেন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।'
 
সালাম নিয়ে আমাদের সমাজে ঘটে চলা ঘটনাগুলোর সামান্য ক'টি খণ্ড চিত্র এগুলো। এর বাইরেও আরও বহু চিত্র আছে। যেগুলো সালাম নিয়ে আমাদেন জানার কমতি ও বুঝের ঘাটতি থাকার কথাই প্রমাণ করে। 
 
প্রথম ঘটনায় সেই মুরুব্বিকে আমি আগে সালাম দিয়েছিলাম। তিনি উত্তর নিলেন। ব্যাস, হয়ে গেলো। কিন্তু উনি উত্তর নিয়ে পরে আবার পাল্টা যে সালাম দিলেন এটি হলো ভুল প্রথা। সুন্নাহ একে সমর্থন করে না। সুন্নাহ যেটা বলে সেটা হলো, একজন সালাম দিবে অন্যজন তার উত্তর দিবে। ব্যাস, এটুকুই। সালামের উত্তর নেওয়ার পর পুনরায় পাল্টা সালাম দেওয়ার রীতি সুন্নাহসম্মত নয়।
 
 
এমন ঘটনার সম্মুখীন আমি এর আগেও বহুবার হয়েছি। মোবাইলে সালাম দিয়েছি তো ওপাশের মানুষটি সালামের উত্তর নিয়ে পাল্টা নতুন করে আবার আমাকে সালাম দিয়েছে। এমনটা করার কারণ হলো, অনেকেই মনে করে সালাম যেহেতু অন্যকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম তাই অন্যজন আগে সালাম দিয়ে ফেললেও পুনরায় ঘুরিয়ে তাকে সালামটা জানিয়ে দিতে হবে। নইলে যথাযথ সম্মান জানানো হয় না। অথচ প্রকৃত বিষয়টি তেমন নয়।
 এটি কেবলই আমাদের মনগড়া একটি বিশ্বাস।
আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, মূল সালাম ও তার জবাবের বাক্য হুবহু একই রকম বলা যায়। পার্থক্য শুধু এতোটুকু যে, মূল সালামের বাক্যে আলাইকুম কথাটা পরে থাকে কিন্তু জবাবের মধ্যে তা আগে চলে আসে। দেখুন- আসসালামুআলাইকুম এর উত্তর হলো ওয়ালাইকুমুসসালাম। তো দেখা গেলো, অর্থও উভয়টার একই রকম ধরা যায়। ফলে এমনটা ভাবার কোন যৌক্তিকতা নেই যে, সালামের মধ্যে এমন কিছু আছে, যা উত্তরের মধ্যে নেই।যার ফলে আপনাকে উত্তর নিয়ে পুনরায় সালাম শুরুর বাক্যটা শুনিয়ে দিতে হবে। 
 
 
এবার আসি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনাতে। এই বিষয়টার ছড়াছড়ি আমাদের সমাজে এতো বেশি যে, একে মহামারি পর্যায়ের সমস্যা বললেও অত্যুক্তি হবে না। ধর্মীয়
মাহফিল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বক্তৃতার মঞ্চ কোনটাই এর থেকে মুক্ত নয়। বক্তা প্রথমে উপস্থিত ব্যক্তিদের বিভিন্ন বাক্যে সম্বোধন করে সব শেষে সালাম দেয়। এটা সুস্পষ্টভাবে হাদীসের নির্দেশনার খেলাফ। হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'আগে সালাম পরে কালাম।' [১] তাই প্রথমেই সালাম দিয়ে তারপর অন্যান্য কথা বলা উচিত। নইলে শুরুতেই সালাম থাকার সুন্নাহটি আদায় হয় না। 
 
 
সালাম কে কাকে দিবে সেই বিষয়েও হাদীসে নির্দেশনা রয়েছে। এই বিষয়ে কয়েকটি হাদীসের উপর নজর বুলানো যাক। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'আরোহী পদচারীকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক অধিক সংখ্যককে সালাম দিবে। [২]
 
আমি অনেক বছর আগে আলিয়া মাদরাসায় পরীক্ষা দেবার জন্য একবার ভর্তি হয়েছিলাম। যদিও পরে আগ্রহ অনুভব না হওয়ায় বাদ দিয়েছিলাম। তো ভর্তি হবার পরে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ আমি ক্লাস করেছিলাম সেখানে। দেখলাম, শিক্ষক ক্লাসে আসলে ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই দাঁড়িয়ে সমস্বরে তাকে সালাম দেয়। অথচ এটাও সালাম বিষয়ে হাদীসের নির্দেশনার খেলাফ। সুন্নাহ হলো, যিনি আগমন করবেন তিনি উপবিষ্টদের সালাম দিবেন। দেশসেরা অনেক আলেমের ক্লাসে বসার সুযোগ আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। তাদের দেখেছি, ক্লাসে এসে নিজেরাই শুরুতে সালাম দিচ্ছেন। এটাই হলো সালামের ক্ষেত্রে নববী আদর্শ। 
 
 
ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত একটি হাদীস থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, কোন মজলিসে যিনি আগমন করবেন তিনিই সালাম দিবেন। মজলিসের লোকেরা আগমনকারীকে সালাম দিবে না। হাদীসটি হলো, একজন ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এভাবে সালাম করলো ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জবাব দিলেন। অতঃপর লোকটি বসে গেলে তিনি বললেন, 'তার জন্য দশটি নেকী।' তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে 'আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ' বলে সালাম পেশ করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন এবং লোকটি বসলে তিনি বললেন, 'তার জন্য বিশটি নেকী।' তারপর আরেকজন এসে 'আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ' বলে সালাম দিলো। তিনি তার জবাব দিলেন। অতঃপর সে বসলে তিনি বললেন, 'তার জন্য ত্রিশটি নেকী।'[৩]
 
 
সালাম দিলে কেউ ছোট হয়ে যায় না। এমন না যে, শিক্ষক সম্মানীত ব্যক্তি বলে তিনি সালাম দিবেন না। বরং সালাম কেবল নিবেন। অনেক বয়সে বড়ো ব্যক্তিদের মধ্যেও এই ভুল ধারণা দেখেছি।
তারা কখনোই ছোটদের সালাম দেন না। তাদের থেকে সালাম পাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকেন। বাবা-মা তাদের ছেলেমেয়েদের সালাম দেন না। তারা ধরেই নিয়েছেন যে, ছেলে-মেয়েরাই কেবল তাদের সালাম দিবে। যেহেতু তারা বড়ো ও শ্রদ্ধেয়। এমন ধ্যান-ধারণা লালন করার ফলে সবচে বড়ো যে ক্ষতিটা হয় তা হলো আগে আগে সালাম দেওয়ার যে ফযীলত হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে তা থেকে মাহরূম হওয়া।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'যে আগে সালাম দিবে সে অহংকার থেকে মুক্তি পাবে।'[৪] 
 
সুতরাং যারা আগে সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকেন তারা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। অহংকারের মতো মারাত্মকব্যাধি দূর করার এতো সহজলভ্য প্রতিষেধক থেকে দূরে সরে থাকা যে চরম বোকামি তা তো বলাই বাহুল্য। 
 
ছোটদেরকে সালাম দেওয়ার আমল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবী ও তাবেয়ীদের মধ্যে প্রচলিত ছিলো। অল্পবয়সী বলে তারা ছোটদের সালাম দিতে কখনো কার্পণ্য করতেন না। এই বিষয়ে হাদীসের কিতাবে চমৎকার একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। সাইয়্যার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি সাবিত আল-বুনানী রাহিমাহুমাল্লাহ-এর সাথে হাঁটছিলাম। তিনি কয়েকজন শিশুর পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, কোন একদিন আমি আনাস রাদিয়াল্লাহুআনহু-এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিয়েছেন।[৫]
 
 
অনেকে আবার সালামের ক্ষেত্রে পরিচিত-অপরিচিতর তারতম্য করেন। মানে হলো, পরিচিত কেউ হলে তো সালাম দেন। কিন্তু যদি অপরিচিত কেউ হন তখন আর সালাম দেন না। এর পেছনে অবশ্য অন্য আরেকটা কারণও কাজ করে। তা হলো, পরিচিত কেউ হলে তাকে সালাম না দিলে নিজের কাছেই অনেক সময় লজ্জা লাগে। আবার অনেক সময় পরিচিত সেই লোককে সালাম না দিলে তিনি কী মনে করবেন এমন একটা ভাবনাও কাজ করে। কিন্তু অপরিচিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তো আর সেই আশংকা নাই। তাই তাদেরকে সালাম দেওয়ার গরজ অনুভব হয় না।
আমাদের এই মানসিকতাটাও বর্জনীয়। কারণ একবার সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ হতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, 'ইসলামের কোন আমল সুন্দর বা সর্বোত্তম?' জবাবে তিনি বললেন, 'অভাবীদের পানাহার করানো, আর পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম দেয়া।'[৬]
 
 
তাছাড়া কেবল পরিচিতদের সালাম দেওয়া আর অপরিচিতদের সালাম না দেওয়াটাকে হাদীসে কিয়ামতের আলামত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কেয়ামত যতো নিকটে ঘনিয়ে আসছে এর বাস্তবতা ততো প্রস্ফুটিত হচ্ছে। ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহুআনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সূত্রে বর্ণনা করেন, 'কিয়ামতের একটা আলামত হলো, একজন মানুষ আরেকজন মমানুষকে কেবল পরিচিতির সূত্র ধরেই সালাম দিবে।'[৭]
 
 
পরস্পরে সাক্ষাৎ হলে সালাম দেওয়ার অভ্যাস যাদের আছে তাদের মধ্যেও একটা বিষয়ের কমতি দেখা যায়। তা হলো, ঘরে প্রবেশ করার সময় সালাম না দেওয়া। অথচ এটি ঘরে বরকত আনয়নের একটা মাধ্যম। যেমন, এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'তুমি যখন তোমার পরিবার-পরিজনের নিকটে যাও, তখন সালাম দিও। তাতে তোমার ও তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য তা বরকত হবে।'[৮] 
 
 
তবে সালামের যে বিষয়টি আমার সবচে ভালো লাগে তা হলো, সালামের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা-সৌহার্দ্য জন্ম নেয়। আপনি নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। যার সাথে আপনার মনোমালিন্য রয়েছে সামনাসামনি হলেই তাকে সালাম দিতে ভুলবেন না। দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যেই দু'জনের মধ্যে একধরনের প্রীতিবোধ তৈরি হয়ে যাবে। সে হিসেবে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে সালাম একটি মোক্ষম প্রতিষেধকই বলা যায়। হাদীস থেকেও বিষয়টি প্রমাণীত। 
 
আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহুআনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায়, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ঈমানদার ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বলে দিব না, কি করলে তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে।'[৯]
তবে অনেকের অভিযোগ থাকতে পারে যে, আমি তো নিয়মিত সালাম দেই কিন্তু এসব ফায়দা তো পাই না। আসলে সালামের ফায়দা থেকে বঞ্চিত হবার একটা বড়ো কারণ হচ্ছে বিশুদ্ধভাবে সালাম না দেওয়া। আজকাল মানুষজন দায়সারা গোছের সালাম দিয়ে থাকে। যেন কোন মতে একটা বাক্য উচ্চারণ করে দায় শেষ করাই থাকে উদ্দেশ্য। 
 
 
সালামের ক্ষেত্রে মানুষ বেশি ভুল করে থাকে যেসব জায়গাতে তা হলো, শুরুর হামযাহকে হটিয়ে দিয়ে স্লামালাইকুম
বলা। অথবা সীন ও লামকে এক সাথে মিলিয়ে আস্লামুআলাইকুম বলা। এগুলোর কোনটিই ঠিক নয়। বিশুদ্ধ সালাম হলো, শুরুর হামযাহকে বহাল রেখে সীন ও লামকে আলাদা করে উচ্চারণ করা- আসসালামুআলাইকুম। 
 
সালামকে বিকৃত করা মূলত অভিশপ্ত জাতি ইহুদিদের স্বভাব। হাদীসের কিতাবে পাওয়া যায়, একবার একদল ইহুদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, 'আস-সামু আলাইকুম!' অর্থাৎ তোমার মরণ হোক। আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহুআনহা উত্তরে বললেন, 'তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পড়ুক।'
 
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়িশাহ, একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমাদের কর্তব্য। রূঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন করো।' 
 
আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহুআনহা বললেন, 'তারা যা বলেছে তা কি আপনি শোনেন নি?'
তিনি বললেন, 'আমি যা বললাম, তুমি কি তা শোনো নি? কথাটি তাদের উপরই ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তাদের ব্যাপারে (আল্লাহর কাছে) আমার কথাই কবুল হবে আর আমার সম্পর্কে তাদের কথা কবুল হবে না।'[১০]
 
 
এই কারণে সালাম দেওয়ার সময় সতর্ক থাকা উচিত আমাদের। যাতে করে উচ্চারণ বিকৃতির মাধ্যমে এর অর্থ পরিবর্তন না হয়ে যায়। তাছাড়া এটা যেহেতু ইহুদীদের স্বভাব তাই এর থেকে যতো বেশি দূরে থাকা যায় ততোই মঙ্গল। 
 
সালামের অনেক অনেক ফযীলত আছে। এসব ফযীলতের জযবায় অনেকে আবার জায়গায়-অজায়গাতেও সালাম দিয়ে বসে থাকেন। তার মধ্যে একটা হলো মসজিদের ভেতর উচ্চস্বরে সালাম দেওয়া। মসজিদ হলো ইবাদতের স্থান। এখানে মানুষজন নামাজে-তিলাওয়াতে ও যিকির-আযকারে মগ্ন থাকে। জোরে সালাম দিলে তাদের মনোযোগ নষ্ট হওয়ার সমূহ আশংকা থাকে। তাই মসজিদের অভ্যন্তরে জোরে সালাম দেয়া যাবে না। একান্ত সালাম দিতে চাইলে যারা চুপচাপ বসে আছে তাদের কাছে ক্ষীণ আওয়াজে দেয়ার অবকাশ আছে।[১১]
 
 
আসুন, আমরা বেশি বেশি সালাম প্রদান করি। সালামের প্রচলন ঘটাই। সালাম দিতে যে কার্পণ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শ্রেষ্ঠ কৃপণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।[১২] তাই কৃপণ হওয়া থেকে বাঁচতে চাইলে সালামে অভ্যস্ত হওয়ার বিকল্প নেই।
-------------------------------------
♦ তথ্যসূত্র:
১. তিরমিযী: ২৬৯৯ ; সনদ হাসান।
২. সহীহ বুখারী: ৬২৩২
৩. তিরমিযী ২৬৮৯, আবূ দাউদ ৫১৯৫
৪. শুআবুল ঈমান, বাইহাকী: ৮৪০৭; সনদে কিছুটা দুর্বলতা আছে।
৫. সুনান আত-তিরমিযী: ২৬৯৬; সনদ সহীহ
৬. আবু দাউদ- ৫১৯৬
৭. মুসনাদে আহমাদ: ৩৮৪৮; হাসান
৮. সুনান তিরমিযী: ২৬৯৮; যঈফ
৯. সহিহ মুসলিম: ৯৮
১০. সহীহ বুখারী: ৬০৩০
১১. ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩২৫, ফাতাওয়ায়ে বাজ্জারিয়া :৩/৩০০, আপকে মাসাইল আওর উনকা হল :৮/১৫৭
১২. আলমুজামুল আওসাত, তাবারানী: ৫৫৯১
 
Post link HERE https://www.facebook.com/Umm-Maryams-Diary-1597989236960711/?__cft__[0]=AZWw0l_uGd8dL8funQna1l2alQ8HrAFBygxPBuHorWn2arQMkf0IPVOwOI8edMvsIKsjSoPCcKId8jUs73AmppjyBmgFFTEioFTLYx7UaqA2U6g0W0e9KlUhgHgJfa13pRaiQb1wVVbL2DDcZJaePluwjFbGoDfGIuryifogOenoyXa9kbxm34LUXPKJ2f8vrn4&__tn__=-UC%2CP-R

যুবকদের ভিতরে ঈমান উজ্জীবিত করার কোন দায়িত্ব পিতামাতা পালন করেন না।


চার পাঁচ বছর পর্যন্ত খুউব আদর করেছে।
সাত আট বছরে স্কুলে ছেড়ে দিয়েছে।
বারো তেরো বছরে আর কোন খোঁজই নেয়না।
কি জানে? "আমার ছেলে পড়ে" কে বন্ধু? মসজিদে যায় কিনা? নামাজ পড়ে কিনা? কোন খোঁজ নেয়না।

যখন পনের, ষোল, সতের, আটারো বছর বয়স হয় বাবাও জানে, মাও জানে-'আমার ছেলের অমুক মেয়ের সাথে Affair আছে'। কি যেন বলে? -রিলেশন আছে। শোনেন না এগুলো? মা বাবা জানে না? জানে।

মেয়ের বাবাও জানে, ছেলের বাবাও জানে। মেয়ের মাও জানে, ছেলের মাও জানে যে, 'এই বয়সে তো একটু কিছু হবেই'। এটাই তো কথা! আচ্ছা,এই যে ছেলে মেয়ে রিলেশন করে, এটা ফরয? না ওয়াজিব? না সুন্নাত? নাকি মুস্তাহাব? এটা কি?

- হারাম!

এই হারাম কাজ যদি কেউ মেনে নেয়,আউলাদ হারাম করে,আর বলে 'NO PROBLEM, IT’S OK। বড় হলে সেরে যাবে, তার কি ঈমান থাকে?

শরীয়তের পরিভাষায় তাকে বলা হয় 'দাইয়ূস'। এই হলো পিতামাতার অবস্থা।

কিন্তু প্রব্লেম অন্য জায়গায়, ঐ যে যুবক যুবতী, ওদের ভিতরে ঈমান আছে। ওর মা শেখায়নি, বাবা শেখায়নি, বোন শেখায়নি, ভাই শেখায়নি, স্কুলে ঈমান শেখানো হয়না, প্রতিষ্ঠানে নেই, সমাজে নেই, টিভিতে নেই..

তারপরেও -ফিতরাতি, ন্যাচারাল ঈমান ওর(সন্তান)ভিতরে নড়ে। তাইতো, এই যে ছেলে মেয়ের রিলেশন অবৈধ হলে গুনাহ হবে, কিন্তু মন টানে, সম্পর্ক হয়ে গেছে, একে অপরের কাছে আসতে চায়। আবার পাপের ভয়েও বলে:হুজুর? মোবাইলে প্রেম করলে গুনাহ হবে? -হ্যা বাবা,গুনাহ হবে।

:কি করবো? ওরা তখন ঈমানের তাড়নায় কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে। এতকাল হারাম করছিলো, বাবা মা'র কোন আপত্তি ছিলোনা।

বিয়ে করার পরও কি হারাম? নাকি হালাল? 'হালাল'।

এইবার বাবা মা আকাশ পাতাল ভেঙে ফেলে দিবে। যে,"হারাম করছিলি,করছিলি।" "তুই হালাল কাজটা কেন করলি?"

আপনারা হাসছেন??

বড় আফসোস লাগে ভাইয়েরা,বড় আফসোস লাগে।

আমার এক ছাত্র বুয়েটে পড়ে। ইঞ্জিনিয়ার, খুব ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। বাবা মা দ্বীনদার। ওকে হিফজখানায় দিয়েছিল,হাফিজও হয়েছিল। এরপর আলিম পাশ করে বুয়েটে গিয়েছে। দাড়ি আছে। আমার সাথে 'প্রশ্ন উত্তর' শিক্ষার একটা সম্পর্ক আছে। আমাকে বলতেছে-স্যার, এবার ফোর্থ ইয়ার শেষ করবো।
স্যার, এতোদিন পাপের ভয় হতো। খুব চেষ্টা করেছি পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার। এখন পাপ ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু বাড়িতে যদি বিয়ের কথা বলি, মনে হয় যেন আসমান ভেঙে পড়েছে। বুয়েট থেকে অনার্স পাশ করেছে, ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে, এখন বিয়ে কেন?
আরো দশ বছর যাক, তুই আরো ডিগ্রি কর, পিএইচডি কর,প্রতিষ্ঠিত হ। এরপর ৩৫-৪০এ বিয়ে শাদি করবি।

যখন আর বিয়ের দরকারই থাকবেনা! -তাহলে এখন কি হবে? এখন যিনা করবি!

তো এই হলো দ্বীনদার সমজের অবস্থা।
আপনার ছেলে, আপনার মেয়ে বিয়ে করতে চাইলে আপনার কষ্ট লাগে।আর ওরা অবৈধ রিলেশন করে,তাতে আপনার কষ্ট লাগেনা।
আপনি ইহুদী, খ্রিস্টানদের ষোল আনাই আধিপত্য মেনে নিয়েছেন।
আপনি হয়ত নামাজ পড়ছেন, রোযা রাখছেন, আপনি শবে বরাত করছেন, আপনি হুজুরদের ওয়াজ শুনছেন।
মনে করছেন, 'মাশাল্লাহ', আমি কতবড় মুসলমান। কিন্তু সন্তানের প্রতি দায়িত্বের এই অবহেলায় আপনাকে আল্লাহর কাছে পাকড়াও হতে হবে।
আল্লাহ হেফাজত করুন,আমীন।

-ড. আব্দুল্লাহ জাহাঈীর।(রাহিমাহুল্লাহ)

Decoding life

▫️True #freedom comes when you free yourself from the slavery of-
"what would people say" and "social images"..
 
▫️True #courage comes when you fear your maker alone,
and no one else !
 
▫️True #gain can even reside within
material failures! 
when you don't lose your morals in the process..
 
▫️True #loss is when you sacrifice your morals,
just to grab a few trophies of material success!
 
▫️True #relief is when you finally realize-
everything that begins in this 'life',
comes with an inevitable "expiration date"..
 
 
(original writeup)

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে উওম আখলাক গঠনের তোফিক দান করুক।আমিন

৫০ মিনিট সালাত আদায়, তাহাজ্জুদ পরা, যদিও তপ্ত বালুর বুকে দাঁড়িয়ে পড়েন যত টা কঠিন,,তার চেয়েও অনেক বেশি কঠিন উত্তম আখলাক ধারণ করে ১০-১৫ মিনিট সবর করা।

কেউ আপনার মুখের উপর থুথু দিল।আপনি জুতা খুলে তেড়ে এলেন বা তাকেও থুথু দিলেন।এটা অনেক ইজি। কঠিন হল, সবর করা,ক্ষমা করা,চুপ থাকা।

সুন্নত অনুযায়ী লেবাস পরা,কপালে সিজদাহ এর দাগ ওয়ালা বহু মানুষ আছে। কিন্তু উত্তম আখলাকের মানুষ দেখি খুব কম,যার সংস্পর্শ এ এলে হৃদয় শীতল হয়,পজিটিভ কিছু শেখা হয়।

আমার আখলাক মোটেও উত্তম না। একদম অধম থেকে একটু উপরে উঠার চেষ্টা করছি।

আশেপাশে অনেক টক্সিক মানুষ,নোংরা মানুষ। আমার চেয়ে বয়সে, জ্ঞানে,পজিশন এ অনেক বড় বড় মানুষ এর ও দেখি এই মেন্টালিটি যে কিভাবে এই মেয়ে /ছেলে কে টিজ করা যায়,পোক করা যায়।
তার পজিশন অনেক নিচে,আমি যা বলব সে সহ্য করতে বাধ্য।

কিন্তু এখানে ইকুয়েশন এ সেই মহান সত্তার কথা,আমার রাব্বের কথা ভুলে যাচ্ছেন যিনি আপনার,আমার মত অধমকে জবান দিয়েছেন,যিনি বিচারক দের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক।
ধরলাম আমি অনেক পাপী, কিন্তু আমি চুপ থাকলাম। সবরের খাতায় কিছু যোগ হল।আপনি যে নোংরামি করলেন তা আপনার গুনাহের খাতায় যোগ হল।


এই দুনিয়ায় ২ দিনের বাদশাহ হয়ে আপনার কি এমন লাভ হল? আর ২ দিনের গোলাম হয়ে,বাঁদী হয়ে আমার কি ক্ষতি হল?

সেই দিনকে ভয় করেন যেইদিন আমলনামা খুলে দেখাবে। আমার খাতায় আমার সবর, আপনার টায় আপনার গুনাহ থাকবে(যদি আল্লাহ ক্ষমা না করেন)।

বদদুয়া দিতে হয় না,কিছু দুয়া অন্তরের "হায়" হিসেবে বেরিয়ে যায়।

আমার রাব্ব সূক্ষ্ম হিসাব গ্রহণকারী,আমার আপনার রাব্ব কে ভয় করুন।
আমার রাব্ব তো ন্যায় বিচারকারী।তাঁকে ভয় করুন।

আমাকেও ভয় করুন( মজলুম হিসেবে),,আমার মনের "হায়" ও আল্লাহ শুনেন।তিনিই আস-সামি'।
আমার হায় যদি গেঁথে যায়,আমার চোখের পানি, মনের অস্থিরতা যদি আল্লাহ কবুল করে নেন???


এইজন্য আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে উওম আখলাক গঠনের তোফিক দান করুক।আমিন

 Genuine Post Link  Click HERE