দোষ খুজে বেড়ানো > সামাজিক ব্যাধি


অন্যদের যেসব বিষয় লোকচক্ষুর অন্তরালে আছে তা খোঁজাখুঁজি করা এবং কার কি দোষ-ত্রুটি আছে ও কার কি কি দুর্বলতা গোপন আছে পর্দার অন্তরালে উঁকি দিয়ে তা জানার চেষ্টা করা কোন মু’মিনের কাজ নয়। মানুষের ব্যক্তিগত চিঠিপত্র পড়া, দু’জনের কথোপকথন কান পেতে শোনা, প্রতিবেশীর ঘরে উঁকি দেয়া এবং বিভিন্ন পন্থায় অন্যদের পারিবারিক জীবন কিংবা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি খোঁজ করে বেড়ানো একটি বড় অনৈতিক কাজ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোষ অন্বেষণকারীদের সম্পর্কে বলেছেনঃ

“হে সেই সব লোকজন, যারা মুখে ঈমান এনেছো কিন্তু এখনো ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলমানদের গোপনীয় বিষয় খুঁজে বেড়িও না। যে ব্যক্তি মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি তালাশ করে বেড়াবে আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটির অন্বেষণে লেগে যাবেন। আর আল্লাহর যার ত্রুটি তালাশ করেন তাকে তার ঘরের মধ্যে লাঞ্ছিত করে ছাড়েন।” [আবু দাউদ]

মুয়াবিয়া (রা.) বলেন, আমি নিজে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ

“তুমি যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় জানার জন্য পেছনে লাগো। তাদের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে কিংবা অন্তত বিপর্যয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে দেবে।” [আবু দাউদ]

এই প্রসঙ্গে উমর (রা) এর একটি ঘটনা খুবই শিক্ষনীয়। একবার রাতের বেলা তিনি এক ব্যক্তির কণ্ঠ শুনতে পেলেন। সে গান গাচ্ছিল। তাঁর সন্দেহ হলো। তিনি প্রাচীরে উঠে দেখলেন সেখানে মদ প্রস্তুত, তার সাথে এক নারীও। তিনি চিৎকার করে বললেনঃ ওরে আল্লাহর দুশমন, তুই কি মনে করেছিস যে, তুই আল্লাহর নাফরমানী করবি আর তিনি তোর গোপনীয় বিষয় প্রকাশ করবেন না? জবাবে সেই ব্যক্তি বললোঃ আমীরুল মু’মেনীন, তাড়াহুড়ো করবেন না। আমি যদি একটি গোনাহ করে থাকি তবে আপনি তিনটি গোনাহ করেছেন। আল্লাহ দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়াতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আপনি দোষ-ত্রুটি খুঁজেছেন। আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন, দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করো। কিন্তু আপনি প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছেন। আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, নিজের ঘর ছাড়া অনুমতি না নিয়ে অন্যের ঘরে প্রবেশ করো না। কিন্তু আমার অনুমতি ছাড়াই আপনি আমার ঘরে পদার্পণ করেছেন।” এ জবাব শুনে হযরত উমর (রা.) নিজের ভুল স্বীকার করলেন এবং তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করলেন না। তবে তিনি তার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিলেন যে, সে কল্যাণ ও সৎপথ অনুসরণ করবে। [মাকারিমুল আখলাক]
 

বোধদয়

তার সাথে তখন প্রায় চার বছর পরিচয়।
ভাল ছেলে।
পাচ বেলা নামাজ পড়ে।
......
তখন ও আমি ব্যাপারটা জানতাম না।
....
দীর্ঘ চার বছর পর অন্য আরেক জনের কাছে জানলাম, " সে হাফেজ। কোরানে হাফেজ"
...
আমরা বিস্মিত হলাম। এতদিন ধরে পরিচয় কখনো ঘূর্নাক্ষরে জানতে ও পারলাম না!!!!
......
তাকে বললাম, " কিরে ভাই, এতদিনের সম্পর্ক। কই কখনো তো শুনলাম না তোমার মুখে.....
.........
তার জবাব ছিল আমার জন্য একটা ধাক্কা, বিস্ময় এবং রিয়ালাইজেশন।
.......
....
সে জবাব দিল- ভাই কথা সত্য। আমি হাফেজ। কিন্তু একজন হাফেজের যেভাবে জীবন যাপন করা উচিত আমি সেভাবে পুরোপুরি পারি না। কাজেই আমি হাফেজ পরিচয় দিলে, মানুষের হাফেজ সম্পর্কে ভুল ধারনা হবে।
.....
....
এই বোধদয় এখন আস্তিক, নাস্তিক, শিক্ষিত,অশিক্ষিত...... অনলাইনে, অফলাইনে দরকার। ভীষণ দরকার।

 এখান হতে সংগৃহীত