আপনি আপনার রবকে ভালোবাসতে পেরেছেন তো?

মেয়েটা চেয়েছিল কোনো এক ফাল্গুনে বসন্তের রঙে নিজেকে অপরূপ করে রাঙাবে, জীবনে প্রথমবার শাড়ি পরবে, খোঁপায় গুজবে বেলীফুলের মালা। শাড়ির প্রতি তার অদ্ভুত একটা দুর্বলতা কাজ করতো।

মেয়েটা চেয়েছিল এলোচুল মেলে দিয়ে লঞ্চের কামরায় বসে জানালার বাইরে পানির ঢেউ দেখবে, হু-হু বাতাসে তার এলোচুল উড়ে গিয়ে পড়বে পাশে বসে থাকা মানুষটার চোখেমুখে.. মানুষটা বিরক্ত হবে, সে মিষ্টি করে হাসবে।

মেয়েটা বৃষ্টি ভালোবাসতো। মেয়েটা চেয়েছিল ঝুম বরষায় বৃষ্টিতে স্নান করবে, গায়ে লেপটে থাকবে ভেজা চুল, জামা; জুতোয় পানি ঢুকে যাবে -- সেদিকে সে মোটেই পরোয়া করবে না। বান্ধবীকে বলেছিল, এতোকিছু খেয়াল করলে জীবনটা 'এনজয়' করা যায় না। 

কিছুই করেনি সে।

 শাড়ির বদলে এখন কেমন ঢোলাঢালা একটা কাপড় পরে, চুলগুলো সযত্নে মুড়ে রাখে বড়ো ওড়নায়। ভেতরে খোঁপা আছে নাকি ফুলের মালা সেই রহস্য আর ভেদ হয় না।
বৃষ্টি হলে একদৌড়ে কোনো ছাউনির নিচে গিয়ে যখন আশ্রয় নেয়, ওর বান্ধবীরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তাকে প্রশ্ন করলে বলে - ভিজলে গায়ের শেইপ বোঝা যায়, আমার লজ্জা লাগে।

কী অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন, কী সীমাহীন বৈপরীত্য।

 সেদিনকার সেই মেয়েটা এভাবে বদলে গেছে ভাবাই যায় না। মেয়েটার তীব্র বাসনা, ঘোরলাগা স্বপ্নগুলো আর পূরণ হয় না। কিছু স্বপ্ন সে তুলে রাখে ভবিষ্যৎ স্বামীর জন্যে, কিছু তোলা থাকে জান্নাতে পূরণের আশায়।

 মেয়েটা তো ভিজতে ভালোবাসতো, সাজতে ভালোবাসতো, শাড়ি পরে সবার সামনে ঘুরতে ভালোবাসতো। তাহলে কেন সব ছেড়েছুড়ে বৈরাগী হয়ে গেল? কেন জীবনটাকে "এনজয়" না করে এমন সাদামাটা হয়ে চলা? এর কারণও ভালোবাসা।


 ভালোবাসার অনেকগুলো স্তর আছে। মেয়েটার ভালোবাসার সীমানা তার নিজেকে ছাড়িয়ে গেছে, এই পৃথিবীর জীবনকে, এই পৃথিবীর মানুষগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে। মেয়েটা ভালোবাসে তার রবকে--প্রচণ্ড ভালোবাসে। ভক্তি, ভয়, সম্ভ্রমে ওর মাথাটা ঝুঁকে আসে। তীব্র ভালোবাসার জন্যে নিজেকে বদলে নেয়া যায়। ভালোবাসার সামনে ছোটোখাটো ত্যাগগুলোয় কী পরম সুখ লুকিয়ে আছে; সেটা সে ছাড়া আর কেউ বুঝবে না।
আপনি আপনার রবকে ভালোবাসতে পেরেছেন তো? কতোটা ত্যাগ আমরা আল্লাহর জন্য করতে পারি?

>>কালেক্টেড পোস্ট<<

ভালো বই পড়ুন । উত্তম জীবন গড়ুন

একটা প্রচলিত গল্প আছে, সেদিন একজনের ওয়ালে পড়েছিলাম। এক বারে বসে এক মদ্যপ ব্যক্তি একজন মহিলাকে তার সাথে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেন। মহিলা মদ্যপ হলেও নিজেকে অভিজাত ভাবেন। রাগে কটমট করে তার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকান। পুরুষটি চট করে বলেন, “দেখুন মাত্র একটি রাত কাটানোর বিনিময়ে আপনাকে আমি এক শ কোটি টাকা দেবো, আরেকবার ভেবে দেখুন রাজি কি না।” টাকার পরিমাণ শুনে মুহুর্তেই ভাবান্তর ঘটে মহিলার; কটমট ভাবটা চলে যায়, চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করে ভাবতে শুরু করেন।
পুরুষটি হঠাৎ বলে ওঠেন, “না, এক শ টাকা দেবো, ভেবে বলুন—রাজি কি না! মহিলা সাথে চিৎকার করে ওঠেন: হ্যা, অসভ্য কোথাকার, আপনি কী মনে করেছেন! আমি কি... নাকি, আমি কি... নাকি?
পুরুষটি বলেন, আপনি কী তা আমি ইতিমধ্যেই বুঝে নিয়েছি; শুধু এমাউন্টটা কত হবে এখন তা নির্ধারণ নিয়ে একটু বার্গেইন করছি আর কি!
আদর্শ-বিশ্বাসকে যদি একবার দর কষাকষির বিষয়ে পরিণত করা হয় তার অবধারিত পরিণতি হলো তা হারিয়ে ফেলা—একটু আগে কিংবা পরে। শয়তানের সাথে ঈমানদারের এমন দর কষাকষি চলে প্রতিনিয়ত।
সে এসে আমাদের ঈমানকে নিলামে তুলে দেয়। বলে, আরে তুমি তো সূদ খাও না, খেতে চাও না। আল্লাহ্‌র অবাধ্যতাও করতে চাও না। ঠিক আছে, কিন্তু পরিবারেরও তো তোমার উপর একটা হক্ব আছে। তারা তোমাকে এতো টাকা পয়সা খরচ করে লেখা পড়া করিয়েছে। আর চাকরিটাও কত ভালো, প্রতিষ্ঠিত একটা ব্যাংক, কত হ্যান্ডসাম স্যালারি। আপাতত কিছু দিন করো, তারপর না হয় অন্য কোথাও তোমার পছন্দমতো কোনো জব খুঁজে নিও।
আপনি রাস্তায় মাথা নিচু করে হাটবেন; সে এসে বলবে, হ্যা ঠিক আছে, তুমি তো মাথা নিচু করেই চলো কিন্তু এটা কোনো সাধারণ চেহারার মেয়ে নয়, না দেখলেই মিস, অসাধারণ। তুমি তো বিয়ের জন্য পাত্রিও খুঁজছো। সেজন্যও তো একবার দেখে নিতে পারো।
শয়তান এসে বলবে, আরে তুমি নিজে তো আর এই পাপ করছো না, এই সূদী ব্যাংকের পোর্টালটা কিংবা ঐ খারাপ সাইটটা ডেভেলপ করে দিলে কী হবে? তুমি না করে দিলে কি তাদের কাজ বন্ধ হয়ে থাকবে? কেউ না কেউ কেউ তো করবে। তাহলে এত বড় কাজটা ছেড়ে দিয়ে তোমার কী লাভ হলো!
শয়তান এসে হতাশায় মনটা ভরিয়ে দেবে। বলবে দেখো, কী পেলে জীবনে। তোমার সাথে একই ইউনিভার্সিটিতে পড়তো। দেখো, ওর জামাই ওকে সাথে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করতে গেছে; অমুক বসুন্ধরায় ফ্ল্যাট কিনেছে; অমুকের কত দামি দামি শাড়ি-গয়না, অমুকের জামাই সারাক্ষণ বৌএর পেছনেই ঘুরঘুর করে... তুমি একটা কী জামাই পাইলা?
শয়তান এভাবে দারিদ্রের ভয় দেখিয়ে, হতাশ করে আমাদের ঈমানকে নিলামে তোলে। এরপর শুরুতে যদিও দাম হাকা হয় অনেক, কিন্তু বিক্রিতে রাজি হয়ে গেলে হাতে কাচকলা ধরিয়ে দিয়ে চলে যাবে। শয়তান যদি একবার বুঝে ফেলে যে আপনি ঈমানটা বিক্রিতে রাজি আছেন, শুধু একটু বার্গেইনিং এর ব্যাপার, তবে সে আপনার ঈমান নিয়েই ছাড়বে এবং এক রকম বিনামুল্যেই নিয়ে নেবে।
তাই শয়তানকে না বলে দিন, শক্ত করে। কোন হতাশা নয়, কোনো লোভ নয়, কোনো না-পাওয়ার ঘ্যানঘ্যানানি নয়। বলে দিন, আমি আল্লাহকে ভালোবাসি। জীবন দেবো ঈমান দেবো না। বলে দিন, আমার বিশ্বাস কোনো পণ্য নয়, নিলামে তোলার বস্তু নয়। বলে দিন, আমার আল্লাহ আমাকে ঠিক সেই অবস্থানেই রেখেছেন যেটার আমি উপযুক্ত, যেখানে তিনি আমাকে দেখতে পছন্দ করেন, যে অবস্থানের মধ্যে আমার কল্যাণ রেখেছেন। আমি তাঁর প্রতি সর্বাবস্থায় কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে যা দিয়েছেন তা নিয়েই আমি খুশি, আমি বাধিত। তিনি আসমান জমিনের প্রভু, মালিক ও প্রতিপালক। তিনি জানেন আমি জানি না।
ভালো বই পড়ুন । উত্তম জীবন গড়ুন.
>>কালেক্টেড পোস্ট<<

ইয়া রব, হেদায়েত দাও, তোমার পথে চলার শক্তি দাও

মুসলিম হিসেবে তো কতজনই জন্ম নেয়। কিন্তু শেষতক জায়গা করে নেয় জাহান্নামের আগুনে।
 সারাজীবন নাচ, গান, পার্টি কোরে সুদ, ঘুষ খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে নির্লিপ্ত ভাবে চলাফেরা। মুসলিম একটা নাম শুধু বস্তির শিশুদের কোমরে-বাঁধা-তাবিজের মত অযত্নে মানুষটার সাথে লটকে থাকে, কাজেকর্মে ইসলামের কোনো প্রকাশ থাকে না।

তবুও অনেকেই সময় থাকতে মোড় ঘুরে দাঁড়ায়। জীবনের আগাছাগুলো পরিষ্কার করে নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করে। জান্নাতে যাওয়ার রহস্যটা এখানেই।

আপনার সামনে যখন ইসলামের আলো হাজির হয়, একে কবুল করুন। 
 যদি কেউ উত্তম উপদেশ দেয়, একে কবুল করুন। 
যখন কেউ ইসলামের দিকে ডাকে, সেই ডাকে সাড়া দিন।
 জীবনটা বদলানো যত কঠিনই হোক না কেন, রবের কাছে কোনো এক রাতের আঁধারে চুপিচুপি বলুন, ইয়া রব, হেদায়েত দাও, তোমার পথে চলার শক্তি দাও।
 জান্নাতের পথে হাঁটার সুযোগ করে দাও।
মন যখন রবের রহমত পাওয়ার আশায় ব্যাকুল হয়ে যায়, আল্লাহ কি তা ফেলতে পারেন?
 মহান তাঁর ক্ষমতা, বিশাল তাঁর দয়া।
 এত দয়া যার, তার কাছে সত্যিই অন্তর থেকে কিছু চাইলে সে ফিরিয়ে দেবে এমন হয় না--নিশ্চয়ই আমাদের রব বান্দাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান।

>>কালেক্টেড পোস্ট<<

এই লেখা সব মায়েদের জন্য ডেডিকেটেড

কিছু কথা যা সম্ভবত প্রতিটা বাচ্চার মাকে কখনো না কখনো শুনতে হয়-

* বাচ্চাকে ঠিকমতো খাওয়াও না কেন? সাস্থ এমন কেন?
* বাচ্চা বেশিদিন অসুস্থ থাকলে, বাচ্চা এখনো সুস্থ হয়না কেন? ভালোমতো দেখাশোনা করনা?
* বাচ্চা নিয়াও ঘরের সব কাজ করতে হবে। আর মানুষের বাচ্চা নাই? ওদের ঘর দেখো কেমন গুছানো (ইয়ে, মেহমান আসার আগে সবাই ঘর গুছিয়েই রাখে!)
* বাচ্চা ব্যথা পেলে, কেমন মা তুমি বাচ্চাকে দেখে রাখতে পারোনা?
* বাচ্চার কারণে কোন কাজ করতে না পারলে, নিজে কাজ করতে পারোনা বাচ্চার নাম দিওনা।
* বাচ্চা যদি ভুল কিছু করে, কেমন মা তুমি বাচ্চাকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারোনা?
* সাথে বোনাস হিসেবে আছে অযাচিত উপদেশ, বাচ্চাকে এভাবে খাওয়াবেন, এভাবে ঘুম পারাবেন, এভাবে গোসল দিবেন, এভাবে এটা করবেন এভাবে সেটা করবেন! আলহামদুলিল্লাহ মানুষের জ্ঞান দেওয়ার অভাব নাই।যেন মা একাই কিছু জানেনা কিন্তু যার এখনো বাচ্চাই হয়নি সেও মায়ের চেয়ে বাচ্চার ব্যাপারে এক্সপার্ট।

মা অনেক কিছুই ভুল করতে পারে,সঠিকটা জানানো সেক্ষেত্রে অবশ্যই উচিৎ তবে তা এমনভাবে না যেন মা কিছুই জানেনা এবং মায়ের মনে কষ্ট দেয়।সুন্দর করে বলা যায়,আচ্ছা আপু আপনি তো এভাবে করেন,অমুক ভাবে করে দেখবেন ইন শা আল্লাহ আরও ভালো ফল পাবেন।

উপরে যা বললাম এসব আসলে মায়েদের যেসব কথা শোনা লাগে তার মাত্র ১০%। হ্যা মাত্র ১০%! বাচ্চা যত বড় হতে থাকবে বাচ্চার প্রতিটা ভুলের জন্য মা দায়ি। মা ছাড়া যেন সবারই বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা বেশি।মা শুধু জন্ম দিবে, দুধ খাওয়াবে আর উলটাপালটা বাচ্চা পালবে!

এখন আসি ইসলামে মায়ের মর্যাদার উপর কি বলে। এই হাদিসটা আমরা সবাই জানি সন্তানের উপর মায়ের অধিকার তিনবার বলার পরে বাবার অধিকার। আর বাকিদের কথা তো তাহলে বাদই দিলাম।আল্লাহ যেখানে বাবাকেও মায়ের অধিকারের চেয়ে অনেক কম অধিকার দিয়েছেন তাহলে নিশ্চয় কোন কারণ আছে।মায়ের অধিকার এতো বেশি কেন? একজন মা তার বাচ্চাকে যেভাবে ভালোবাসে, যেভাবে বাচ্চার ভালো চায় তার ধারের কাছে দুনিয়ার কেও চাইতে পারেনা।আই রিপিট,কেও চাইতে পারেনা।
 বাচ্চার কোন সমস্যা হলে মা বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলে, বাচ্চার অসুস্থতাতে মা যেভাবে ব্যাকুল হয়ে রাত জেগে সেবা করে,আল্লাহর কাছে দুয়া করে সেভাবে কি আর কেও পারবে? এজন্যেই আল্লাহ সন্তানের জন্য মায়ের দুয়া দ্রুত কবুল করেন।আর কারও দু আ কি এভাবে দ্রুত কবুল হয় সব সময়? আর কার পায়ের নিচে আল্লাহ সন্তানের বেহেস্ত রেখেছেন? এতো বড় মর্যাদা কি আল্লাহ এমনি দিয়েছেন?

একজন মুসলিম মা তার সন্তানকে আল্লাহ প্রদত্ত আমানত হসেবে দেখে।ভালোবাসার পাশাপাশি আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর জন্য তৈরি করা তার দায়িত্ব। যে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাকে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। সেই মা নিশ্চয় কখনোই নিজের অক্ষমতাকে সন্তানের নামে চাপিয়ে দিবেনা। নিশ্চয় সে তার সন্তানের ব্যাপারে অবহেলা করবেনা। কিন্তু তবুও মায়েদের কথা শোনা লাগে। আমাদের মায়েদেরওশুনতে হয়েছে,তাদের মায়েদেরও, তাদের মায়েদেরও। যুগ যুগ ধরে সব দোষ সব ভুল শুধু মায়েদেরই, আর মা ছাড়া সবাই বাচ্চাকে বেশি ভালোবাসে!! এমনকি যারা এই অবস্থা ফেইস করেছেন তারাও অন্য মায়েদের খোঁটা দিয়ে থাকেন!

বাচ্চা নিয়ে মাকে কথা শোনানোর আগে একবার ভাববেন যে যাকে বলছেন সে বাচ্চার মা।৯ মাস বাচ্চাকে পেটে নিয়ে সে কষ্ট করেছে, বাচ্চার জন্য রাতের পর রাত জেগেছে, নিজের শখ আহ্লাদ, সুবিধা,ইচ্ছা সব বাদ দিয়েছে সন্তানের ভালোর জন্য।সন্তান জন্মের পর আপনি তার বাবা, মামা, খালা, দাদা দাদি নানা নানি ইত্যাদি হয়েছেন।কিন্তু বাচ্চা পেটে আসার সাথে সাথেই মা মা হয়েছেন। ভুল করলে অবশ্যই সঠিকটা ধরিয়ে দিবেন তবে তা মাকে মা হিসেবে সম্মান করে। বাচ্চার কেয়ারটেকার হিসেবে না।

[এই লেখা সব মায়েদের জন্য ডেডিকেটেড। আমি লিখেছি বলে আবার এটাকে আমার ঘরের চিত্র ভাববেন না। আমি সবার থেকে দূরে একা থাকি।তবে এমন মা খুঁজে পাওয়া যাবেনা যাকে কারও থেকে কথা শুনতে হয়নি।সেটা পাশের বাসার অবিবাহিত পিচ্চি মেয়ে হলেও হতে পারে!!]
>>কালেক্টেড পোস্ট<<

আল্লাহ ক্ষমাশীল, তবে ন্যায়বিচারকও বটে |

আমার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের বেশিরভাগের জন্মই মুসলিম পরিবারে। সবাই কমবেশি ইসলামের বেসিক রুলগুলো জানেন।

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রমাদানের রোজা, নারীদের জন্য হিজাব, পুরুষদের জন্য দাড়ি, নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশা ও বন্ধুত্ব না করা, গান-মুভি-সিরিয়াল না দেখা, সামর্থ্য থাকলে যাকাত আদায় ও হজ্জ্ব পালন--এই কাজগুলো ইসলামের একেবারেই বেসিক এগুলো সবাই জানেন। এছাড়াও মিথ্যা না বলা, সুদ-ঘুষ না নেওয়া, কথা দিয়ে কথা রাখা- এই বিষয়গুলো তো আমাদেরকে ছোটোবেলা থেকেই শেখানো হয়। অথচ মানে কজনা!

মুসলিম হয়ে বড়ো হয়ে ওঠা বেশিরভাগ লোকই এখন এসব মেনে চলছেন না। এমনকি মানার চেষ্টাও তাদের মধ্যে নেই।

মানার চেষ্টা নেই - কীভাবে বুঝি?

যখন দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়াশোনা, আড্ডা, সিনেমা বা খেলা দেখার জন্য ব্যয় করা হচ্ছে, কিন্তু সঠিক সময়ে সালাত আদায় করা হচ্ছে না। "সময় পাই না" এক্ষেত্রে খোড়া যুক্তি বলাই বাহুল্য!

অফিস, জার্নি, বাচ্চাদের স্কুল বা ফাংশনের জন্য ভোরবেলায় উঠে যেরে পারছেন, কিন্তু ফজরের সালাতটা নিয়মিত মিস হচ্ছে। "ঘুম ভাঙতে চায় না" কথাটা এক্ষেত্রে ফালতু অজুহাত ছাড়া আর কিছু?

এরকম আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে, অত উদাহরণ দিয়ে লেখাটা বড়ো আর বিরক্তিকর করতে চাই না, সহজ কথা হলো- আমরা যদি নিজেদের সাথে ধোকাবাজি না করি, তাহলে বুঝতে পারবো বেসিক এই ইবাদতগুলোর ব্যাপারেও আমরা কত্তো উদাসিন! বড়ো বড়ো কঠিন ইবাদতের কথা নাহয় বাদই দিলাম, ইসলামের ন্যূনতম কাজগুলিও আমরা ঠিকমত করতে চাই না। আমাদের অন্তর থেকে যেন আখিরাতের ভয়, বিশ্বাস উঠে গেছে! অথচ মুখে বলছি আমরা আখিরাতে বিশ্বাস করি, আমরা মুসলিম....

ইসলাম সম্পর্কে আমরা অনেকেই কম জানি এটা সত্যি, কিন্তু অজ্ঞতা আমাদের জন্য যতোটা না সমস্যা, তারচেয়েও বড়ো পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জ্ঞান! আমরা অনেক কিছুই জানি, জেনেও মানছি না। আমাদের সমস্যা আমরা আল্লাহকে ভয় পাচ্ছি না। আমরা আখিরাতের কথা ভুলে যাচ্ছি। আল্লাহর দেয়া বিধানগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছি, এমনকি পরদিন থেকে মানার নিয়ত পর্যন্ত করছি না! অনেকে তো এটাও বলেন যে, মন থেকে আসলে করব, বা আল্লাহ যেদিন আমার মন বদলায় দিবেন সেদিন সবই করব। সুবহান আল্লাহ! আল্লাহ তার অন্তরই বদলান, যে নিজে আল্লাহর দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। নিজের মনে ভালো কাজের নিয়্যত করুন, আল্লাহকে ভয় করুন, আল্লাহ তা'আলার কাছে সাহায্য চান এবং ইসলাম পালনে আপনার চেয়েও এগিয়ে থাকা লোকদের সাথে বেশি সময় কাটান। দেখবেন আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেই করবে।

আখিরাতে আমাদের বিশ্বাস কতোখানি এটা আসলে প্রমাণ হয় আমাদের কাজের মাধ্যমে। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের কাজ, ইবাদত, আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। ইসলামের হুকুমত জেনেও সেগুলো কেন মানি নাই জিজ্ঞেস করবেন। আমরা সেদিন কী জবাব দেব? আল্লাহর কাছে কি আমাদের জবাব গ্রহণযোগ্য হবে? মনে রাখতে হবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, তবে আল্লাহ ন্যায়বিচারকও বটে। টগবগে যৌবনে যে জন কষ্ট করে ইসলাম পালন করে আর যে লোক সারাজীবন আল্লাহর দ্বীনকে কঠিন বলে এড়িয়ে গেছে, তাদের দুজনের বিনিময় কি কখনও সমান হয়, নাকি সমান হওয়ার?

>কালেক্টেড পোস্ট<