আল্লাহর জন্য কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হয়- হাতের নাগালে থাকা সত্ত্বেও। কারণ, একটাই। আল্লাহ তা পছন্দ করেন না।

হারাম কাজগুলো হল সফট ড্রিংকস এর মত। কাঠ, মাঠ আর বুক ফাটা রোদ থেকে বাসায় ফিরে আসলে অনেকেই কোকাকোলা, পেপসি আর সেভেন আপ পান করে। তৃষ্ণা মেটাতে।
 কিন্তু, একটু লক্ষ করলে দেখবেন কিছু সময় পরে, ত্রিশ বা চল্লিশ মিনিট পরে আবার সেই আগের তৃষ্ণা ফিরে আসে।
কিন্তু, আল্লাহ যে পানি দিয়েছেন, তা ঠান্ডা হওয়া লাগে না কোল্ড ড্রিংকস এর মত, যা আছে তাতেই তৃষ্ণা মিটে যায়। পানি হল আল্লাহর সরাসরি দান। আর এইসব কোল্ড ড্রিংকস মানুষের ম্যানুফ্যাকচারড।
.
যারা হারামের ভিতর আছেন, হারামকে খুব সহজ করে ফেলেছেন, তারা যেই আনন্দটা পায়, তা সাময়িক।
যখন এই বেহায়াপনার ভিতরে থাকে, তখন তাদের "হু কেয়ার্স" টাইপের শার্টের কলার উঁচু করা আর এলোকেশী চুলের ভাবগুলো দেখার মতই হয়। তারা এইটা মাথাতেই রাখে না- তাদের উপরেও প্ল্যানার আরেকজন আছেন। তিনি কেবল দেখছেন, কত নিচে তারা নামতে পারে। এরপর আল্লাহর সময় আসে, আল্লাহ যখন চাল দেন, সেইটা দেওয়ার মতই দেন। এবং সব মাটিতে মিশিয়েই দেন। কোকাকোলার মত সাময়িক আনন্দ নিয়ে বাকি জীবন আফসোসে কাটায়।
_________
.
আল্লাহর কাছে কেউ এইটা বলে পার পাবে না যে, তার কাছে ইসলামের বার্তা আসে নি। আল্লাহ তার কাছে কি চায়? কেন চায়? কিভাবেই বা চায়, তার প্রতিটা ইন্সট্রাকশন তিনি দিয়েছেন।
.
আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। "সৃষ্টি" শব্দটা কিন্তু অনেক পাওয়ারফুল। আমরা, আমজনতা যারা আছি, কখনও কিছু "সৃষ্টি" করতে পারি না। আমরা কেবল রূপান্তর করি, মাটির নিচে থাকা সম্পদগুলো ছাঁচে ঢেলে নিজের ব্যবহারের মত করে রাখি। কিন্তু, আল্লাহ আসলেই "সৃষ্টি" করেন। এবং তাঁর বানানো প্রতিটা প্রাণীই মাস্টারপিস। আমরা বুঝি না বলে! একটা প্রাণীর সাথে আরেকটা প্রাণীর অনেক পার্থক্য। এমনকি দুই জমজ ভাইবোনেও অল্প কিছু পার্থক্য থাকেই।
.
সেই তিনিই যখন আমাদের একটা কাজে যেতে নিষেধ করেন, আমাদের ভালোর জন্যেই করেন। যুগে যুগে "কোন প্রশ্ন ছাড়াই মেনে নেওয়া" একদল লোক যেমন জন্মায় তেমনিভাবে "নিজের মনের চামচা" হয়েও কিছু মানুষ জন্মায়। "আমার জীবন, আমি যা খুশি করবো" মেন্টালিটি নিয়েই থাকে। এই "ভাব" ছুটে যেতে অল্প কয়টা মাস বা বছরই লাগে।
.
.
মজার ব্যাপার হল, মানুষের মন কিন্তু কখনই খালি থাকে না। দুই প্রকার চিন্তা থাকে। একটু খেয়াল করে দেখবেন, হয় আল্লাহর চিন্তা নয় দুনিয়ার চিন্তা (টাকা, চাকুরী, অন্য মানুষ ইত্যাদি)। যে আল্লাহর চিন্তা করে, সে তার দুনিয়াকেই পরকালের জন্য একটা ব্রিজ বানিয়ে ফেলতে পারে। যখনই কোন কাজে যাবে, তা আল্লাহকে ভালবেসেই করবে। আল্লাহর অখুশিতে কিছু করবে না।
.
আর এই শক্তি হঠাৎ করে চলে আসে না। আল্লাহর জন্য কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হয়- হাতের নাগালে থাকা সত্ত্বেও। কারণ, একটাই। আল্লাহ তা পছন্দ করেন না। এখন এরপরেও নানা যুক্তি দিয়ে মানুষ গান, সিগারেট, ফ্যাশন শো, ফ্রি মিক্সিং সহ যাবতীয় কাজ হালাল বানিয়ে ফেলছেন। তাদের বোঝাপড়া আল্লাহর সাথে। আল্লাহ সত্যিই হিসাব নেওয়া শুরু করলে, আসলেই কেউ নিস্তার পাবে না।
════════════════════
.
লেখাঃ Misbah Mahin

>> কালেক্টেড পোস্ট <<

বন্ধুর চেয়ে বেশি প্রভাববিস্তারকারী আর কেউ হতে পারে না।

একজন মানুষকে গুনাহের পথে নেয়ার জন্য একজন বদদ্বীনি বন্ধুর চেয়ে বেশি প্রভাববিস্তারকারী আর কেউ হতে পারে না।
সেই ক্লাস ফোর ফাইভ থেকেই একটা ছেলে বা মেয়ে গুনাহের পথগুলো জানে তার বন্ধুদের কাছ থেকেই এবং একসময় সময়ের সাথে সাথে সে নিজেই সেসব গুনাহতে জড়িয়ে পড়ে। আজ এমন একটি সমাজ গড়ে উঠছে যেখানে নেই কোন নৈতিকতা, নেই কোন লজ্জা, নেই কোন বিবেচনাবোধ। থাকবেই বা কি করে, যেখানে ছোটবেলা থেকেই দ্বীন ইসলামের সামনে আত্মসমর্পণের শিক্ষা পাওয়ার কথা ছিল তার সেখানে সে বন্ধুদের কাছ থেকে শিখছে গুনাহের উপকরণগুলো।
তাই সন্তানকে দ্বীনদারি শিক্ষা দেয়ার সাথে সাথে তাকে বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে কী কী ব্যাপার লক্ষ্য রাখতে হবে তা ছোটবেলা থেকেই তাকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলে আশা করা যায় জীবনের কোন ক্ষেত্রেই সে অসৎ বন্ধুর ফাঁদে পা দিবে না ইনশা আল্লাহ। বদদ্বীনি বন্ধুর পক্ষ থেকে আসা গুনাহের দাওয়াতকে সে স্রেফ পদদলিত করতে পারবে বিইযনিল্লাহ।
.

আমরা যারা দ্বীনের পথে চলতে আগ্রহী কিন্তু চলতে পারছি না, তারা একটু আল্লাহর ওয়াস্তে নিজেদের ফ্রেন্ড সার্কেল বা কাদের সাথে বেশি সময় চলি তা ভেবে দেখি।
 যদি তারা দ্বীন বিমুখ হয় তবে নিজেকে তাদের সংশ্রব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করি। কেননা তাদের সংস্পর্শে গেলে গীবত, নারী আলাপ, আজে বাজে কথা ছাড়া ভাল কিছুই পাওয়া যাবে না। এগুলো না দ্বীনের ফায়দা না দুনিয়ার ফায়দা। অবশ্যই তাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে হবে, কিন্তু দ্বীনের দাওয়াতের উসিলায় তাদের জাহিলিয়াতের মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখলে, তাদের মাঝে বেশি সময় অবস্থান করলে দাওয়াত তো দূরের কথা, উল্টো তাদের জাহিলিয়াতের সাগরে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
 এজন্যই আল্লাহ আযযা ওয়া জাল ও রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বন্ধু নির্বাচনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
.

"জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।"
(সূরা ফুরকানঃ২৭-২৮)
.
"যেদিন কোন বন্ধুই কোন বন্ধুর উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।" (অ্যাড দুখানঃ৪১)
.
"বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়।" (আয যুখরুফঃ৬৭)
.
"তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র। আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী।" (আল মায়িদাঃ৫৫-৫৬)
.
আর কাফির মুশরিকদের বন্ধু বানানো তো আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার। তারা আমাদের ক্লাসমেইট হতে পারে, প্রতিবেশি হতে পারে, অফিসের কলিগ হতে পারে কিন্তু বন্ধু হতে পারবে না, তাদের সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রাখা যাবে না।
.
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফিরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে?" (আন নিসাঃ১৪৪)
.
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "মানুষ তার বন্ধুর স্বভাব-আচরণে প্রভাবিত হয়, সুতরাং যাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে তার ব্যাপারে আগে ভেবে নাও। " [আবু দাউদ, তিরমিযী ]
.
.
লিখেছেনঃ- Sabet Bin Mukter

>> কালেক্টেড পোস্ট <<