দুনিয়ার সবকিছু যদি মধুমাখাও হয় কিন্তু আপনি, আমি জাহান্নামে গেলাম, কি ফায়দা হলো?

 

এক ভাই হতাশতম উক্তি করলেন, "ভাই, দুনিয়া শেষ, সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কোনকিছু করেও কিছু হবে না।"
 
হ্যাঁ, হতাশ হবার মতো বহুকিছু আছে, যদি আপনি চারপাশে তাকান, ঘটমান বর্তমান নিয়ে ভাবেন।
কিন্তু, এতে আপনার আমার কিছুই যায় আসে না। 
কারণ, দুনিয়ার সবকিছু যদি মধুমাখাও হয় কিন্তু আপনি, আমি জাহান্নামে গেলাম, কি ফায়দা হলো?
একিভাবে দুনিয়ার চরম খারাপ সময়েও যদি আপনি আপনার কাজ করে যান এবং আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দেন যেহেতু আপনি পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন তথা ঈমান এনেছেন এবং সৎকর্ম করেছেন তাহলে ধ্বংসপ্রাপ্ত দুনিয়াতেও আপনার হতাশ হবার কিছুই নাই।
 
৫০ হাজার মক্কাবাসীর ভিতর নারীশিশুসহ মাত্র ১৪০ জন মুসলিম দৈনিক অত্যাচারিত হচ্ছিলেন, প্রাণ হারাচ্ছিলেন। সাহাবীরা (রা) বলতে বাধ্য হচ্ছিলেন, 'ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা), আর কত?"
মানে কেউ কোন আশার ছিঁটেফোঁটাও দেখছিলেন না। অথচ অল্প কিছুদিন পর এমন জায়গার মানুষ দিয়ে উনাদের শক্তিশালী করা হলো এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলো যারা ঐ কিছুদিন আগেও ইসলাম কি জানতেন না, বরং নিজেরাই মারামারি করতেন। জী, ইয়াসরিববাসীদের কথা বলছিলাম।
 
বর্তমান দুনিয়ায় কিছু জায়গায় মুসলিমদের ওপর বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। কিছু জায়গায় চরম ক্ষুধা ও দারিদ্র্য। আর সব জায়গায় এমন শাসক বসে আছে যারা ইসলামিক না। 
 
কিন্তু আল্লাহ তো পৃথিবীর ইতিহাসে প্রত্যেক মানবপ্রজন্মকে এরকমভাবেই পরীক্ষা করেছেন। এবং সামনে যারা আসবে তারাও একি পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। 
 
ভাল সময়েও পরীক্ষাটা আসবে কোন না কোন ফরম্যাটে, 
অতীতের ভাল সময়গুলোতেও মুসলিমরা পরীক্ষা দিয়ে গেছেন। কোন ছাড় নাই, তাই পরিস্থিতির দোহাই দেয়া বোকামি।
দেখুন আল্লাহ কি বলছেন,
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰهُ الَّذِیۡنَ جٰهَدُوۡا مِنۡکُمۡ وَ یَعۡلَمَ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۴۲﴾
ام حسبتم ان تدخلوا الجنۃ و لما یعلم الله الذین جهدوا منکم و یعلم الصبرین ﴿۱۴۲﴾
"তোমরা কি ধারণা করছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ কারা জিহাদ করে ও কারা ধৈর্যশীল আল্লাহ তোমাদের মধ্য হতে তাদেরকে এখনও পরীক্ষা করেননি।" (আলে-ইমরান ১৪)
লেখা
লিঙ্ক
https://www.facebook.com/ralph.dreamer








ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ১৪ ( কুরআন কে বন্ধু বানান)

 ** কুরআন এবং রামাদানের মাঝে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। সুরা বাক্বারা আয়াত ১৮৫

** আজকে উম্মতের এগিয়ে থাকা লোক তারা, যারা এক রামাদানের পর আরেক রামাদান আসার আগে কুরআনের উপর ধুলা জমতে দেয় নি। কুরআনের সাথে নিয়িমিত সম্পর্ক বজায় রাখে।

** কেউ যদি বুঝতে পারে কুরআন কি জিনিস, তার আর কিছু দরকার নাই। ( বিস্তারিত অডিও তে )

** আর কেউ নাই, যে কুরআন থেকে ভালো বন্ধু হতে পারে।

** রামাদান মাসে কুরআন-- আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার সুযোগ।

** যতটুকু পারব ততঃটুকু দিয়ে শুরু করব আর রামাদানের পরের সময়ে চালু রাখব। 

** কুরআন কে বন্ধু বানাই, আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপনের এই রশিকে ( কুরআনকে ) আঁকড়ে ধরব।


বিস্তারিত এখানে (২০ মিনিট )

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ১৩

** আল্লাহর সাথে যে ব্যবসা করতে চায়, তার সবসময় ফিকির থাকবে , কী করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যায়। সুরাহ ফাতির( ৩৫), আয়াত ২৯

** বেশিরভাগ মানুষ কিছু ইবাদাতে আটকে যায়, ফলে অনেক ইবাদাত সময়ের সাথে অপিরিচিত হয়ে পড়ে। 

** রামাদান হলো নিজের উন্নতি ঘটানোর ঈমানী থেরাপি।

** হারিয়ে যাওয়া এক ইবাদাত হলো ফজরের আগে ইস্তেগফার করা।ইস্তিগফারের দ্বারা দুনিয়া আর আখিরাত উভয় জীবনে সফলতা লাভ করা যাবে। সুরা হুদ (১১)আয়াত ০৩

** হারিয়ে যাওয়া আরেক ইবাদাত হলো তাফাক্কুর( গভীর চিন্তাভাবনা করা)  সুরাহ আলে ইমরান আয়াত ১০৯/১৯১

++ তাফাক্কুরের দ্বারা বদ্ধ অন্তর উন্মুক্ত হয়।

++ আল্লাহর প্রতি ভয়, আশা,ভালবাসা, নির্ভরতা, ক্ষমাপ্রার্থনা বৃদ্ধি করে।

++ কঠিন হৃদয়কে নরম করে।

++ বিনয়ী করে। 

++ ভালো কাজে অনুপ্রেরনা দেয়।

++ কলবের ময়লা দূর করে।

/++\ দুনিয়া নামক এই জেলখানার দুশ্চিন্তা দূর করতে কাজে লাগে।


** হারিয়ে যাওয়া আরেক ইবাদাত -- তাবাত্তুল

দিনের কিছু সময় দুনিয়া থেকে আলাদা হয়ে  আল্লাহর কাছে একান্তে ইবাদাত করা। সুরাহ মুজ্জাম্মিল (৭৩) আয়াত ০৮


আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন

বিস্তারিত ভিডিও লিঙ্ক এখানে


ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ১১ - ১২

 যে তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না।

** কুরআন শুরু আর শেষ হয়েছে দুয়া দিয়ে। ( সুরা ফাতিহা ও সুরা নাস)

** দুয়ার দ্বারা চেয়ে নিতে হবে।

** গুনাহ থেকে সরে আসতে হবে, সাথে দুয়া করে যেতে হবে।

** দুনিয়ার মাঝে ডুবে থাকা হৃদয় নিয়ে দুয়া করছি, নাকি ইমানদার হৃদয় নিয়ে দুয়া করছি?

** রামাদান মাস দুয়া কবুলের মাস। মনের কোন জড়তা ছাড়া দুয়া করব। এই বরকত ময় সময়েও আল্লাহ দুয়া ফেরত দিবেন না।

** রাতের বেলার তীর ( তাহাজ্জুতের সালাতের দুয়া) শান দেয়ার মাস রামাদান, এমন তীর যা কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না।

** সবকিছুর জন্য আন্তরিক দুয়া-ই যথেষ্ট। 

** দুয়া নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করলে দুয়া বিফলে যায়।

** শেষ রাতের দুয়া এমন এক তীর, যা লক্ষ্যচ্যুত হয় না।

**  দুয়া- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আর বান্দার মধ্যকার সংযোগ।

রামাদান দুয়ার মৌসুম। 

বিস্তারিত (১৬  মিনিট) এখানে ১ ( ১০  মিনিট) এখানে ২



ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ১০

  ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান

আল্লাহ ফিরিয়ে দেবেন না

** সুরা বাকারা আয়াত ১৮৩, ১৮৪, ১৮৫ ১৮৭ রামাদান সম্পর্কিত, মাঝে ১৮৬ আয়াত টি দুয়া সম্পর্কিত, এখানে রামাদানে দুয়ার গুরুত্ব অবহিত করা হয়েছে।

** রামাদান দুয়ার মাস। রামাদান দুয়া কবুলের উত্তম সময়।

সকল সময় দুয়ার জবাব দেয়া হয়। তবে কিছু সময়ে দুয়া কবুলের পসিবিলিটি বাড়ে। 

** দুয়া কবুলের বিশেষ সময় খুজে দুয়া করব।

 ** মাঝে মাঝে দুয়ার আনুষ্ঠানিকতা পালন করা যায়।যেমন অজু করে২ রাকাত নামাজ পড়ে কিবলামুখি হয়ে দুয়া করা।

**অতি উচ্চ বা নিম্ন স্বরে দুয়া না করা। সুরাহ আল ইসরাহ (১৭) আয়াত ১১০

**আল্লাহ দুয়া কবুল করবেন এই দৃঢ় সংকল্পের সাথে দুয়া করব।

** গাফেল অন্তরের দুয়া কবুল করা হয় না।

** ক্রমাগত দুয়া করতে থাকা। রাতারাতি দুয়া কবুল না হলে দুয়া ছেড়ে না দিয়ে দুয়ার পরিমান আরো বাড়িয়ে দেয়া।

** দুয়ার শুরুতে, মাঝে, শেষে দরূদ পড়া

** অন্তরের আমল করে দুয়া করা। দুয়ার আগে তাওবা করা, অন্যের হক আদায় করা, সাদাকা করা, 

** নির্যাতিত, অবহেলিত মুসলিমদের দুয়াতে শরিক রাখা।

** আল্লাহর দরজা কখনো বন্ধ হয় না। 

বিস্তারিত ( ১৯ মিনিট) এখানে

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৯

** মা তার সন্তানের প্রতি যতটা দয়াশীল, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি  তার চেয়েও বেশী দয়াশীল।

** কখনো হতাশ হবেন না।

** ছোট / বড় যে কোন গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিবেন যদি আন্তরিকতার সাথে তওবা করি।

** রামাদান  তাওবার জন্য শ্রেষ্ঠ সময়।

** তাওবা সতকর্মশীলদের জন্য এক স্বান্তনা।

** ওযু করে ২ রাকাত সালাত আদায়ের মাধ্যমে তওবাকে আরো বেশি প্রানবন্ত করে তোলা যায়। 

** রামাদান হলো সমৃদ্ধি অর্জনেরসময়।

** নিজের  ভালো কোন আমল  নিয়ে অহংকার করব না।

** পরবর্তিতে আবার গুনাহ করব এই চিন্তা মাথায় রেখে তওবা করলে তওবা কবুল হয় না। আন্তরিকতার সাথে তওবা করতে হয়।

** বান্দার আন্তরিক তওবায় আল্লাহ খুশি হোন।

**  সুরা আশ শুরা (৪২) আয়াত ৩০


বিস্তারিত ( ১৫ মিনিট ) এখানে



ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৮

 তাওবা ও ইনাবা

* প্রতিনিয়ত আল্লাহকে খুশি করার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকা, বারবার আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া। ক্রমাগত তাওবা করতে থাকা। 

* মানব হৃদয় কে আল্লাহর দিকে ছুটে যেতেই হবে। এতে মানুষের জন্য সম্মান নিহিত। 

* সর্ব অবস্থায় আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়াই ইনাবা।

* সবচেয়ে বেশি আশা জাগানিয়া আয়াত ---- সুরা যুমার (৩৯) আয়াত ৫৩-৫৪

* ইনাবার ৩ স্তর। ৩য় স্তর অর্জন করা রামাদানে আমাদের লক্ষ্য। 

* গুনাহ অন্তরকে শক্ত করে দেয়। সুরা বাক্বারা আয়াত ৭৪

* তাওবার দ্বারা অন্তর ক্লিয়ার করতে রামাদানের মত বরকতময় সময় আর নাই।

* রামাদানে  খাবারের আয়োজনের চাইতে  তাওবা, ইস্তিগফার, আর ভালো আমল করা কি বেশি জরুরি না?

* সবচেয়ে জঘন্য মাত্রার ধ্বংস হলো , গুনাহ করে তাওবা না করা, গুনাহের উপর অবিচল থাকা। 

* বার বার ভুল করলেও হতাশার কিছু নাই। বারবার তাওবা করব, এটা শয়তানের পরাজয়।  নিরাশ হয়ে তাওবা ছেড়ে দেয়া হলো শয়তানের জয়। 

* খারাপ আর গুনাহের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

বিস্তারিত (১৬ মিনিট ) আলোচনা এখানে

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৭

**  এমন যেন না হয়, বরকতময় রামাদান এসে চলে গেলো, কিন্তু আমরা উপকৃত হতে পারলাম না।

** ইবাদাতের মানের দিকে লক্ষ্য রাখা।

** যখন ক্লান্তি ভর করে,তখন জাহান্নামের কথা চিন্তা করব।

** সালাফদের ( আমাদের ১ম প্রজন্মের সৎ  ও ন্যায়পরায়ন মুসলিমদের) জীবন ছিলো সব সময় শেষ পর্যায়ের মত।তাদের প্রতিদিন এমনছিলো, যেনো পরক্ষনেই তাদের মৃত্যু। 

** সমস্যা হলো আমাদের দৃঢ় সংকল্পের অভাব।

 

বিস্তারিত (১৫ মিনিট) ভিডিও লিংক  এখানে

 


ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৬

 ** মুমিনের প্রতিটি দিন ও রাতকে অতি সতর্কতার সাথে কাজে লাগানো দরকার।

** সময় আমাদের  প্রধান সম্পদ, আমাদের প্রধান বিনিয়োগ ।

** সাধারন দিনগুলোই একজন মুমিনের কাছে অতি মুল্যবান, রামাদানের দিন ও রাত গুলো আরো বেশি মুল্যবান।

** রামাদানের শীতলতা অনুভবের জন্য যথাযথ প্রস্তুতির এখনই সময়।

**অলসতা আমাদেরকে আল্লাহর ইবাদাতে বাধা দেয়, অবশ্যই তা প্রতিহত করতে হবে।

**দ্বীনের ব্যাপারে প্রতিযোগিতা করা

    আর দুনিয়ার ব্যাপারে প্রতিযোগিতা থেকে দূরে সরে যাওয়া 


** আখিরাতের জন্য দুনিয়াতেই সঞ্চয় করতে হবে। 

** নিজের চেয়ে উত্তম ব্যাক্তিদের সাথে বেশি বেশি মেলামেশা করা দরকার। ( সুরা মতাফফিফিন ২৬)

** একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি কে নিজ জীবনের উদ্দ্যেশ্য বানালে আল্লাহ উত্তম প্রতিফল দিবেন। সুরা আন নাহল ৯৭)

বিস্তারিত (২০মিনিট) ভিডিও লিংক  এখানে

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৪

 ** আল্লাহ বলেছেন, সাওম কেবল্ আমার জন্য। কেন সাওমকে আলাদাভাবে তাঁর নিজের জন্য বলে ঘোষণা করলেন?

** সাওমে রিয়া (লোক দেখানোর সুযোগ নাই। এটা গোপন ইবাদত, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানতে পারে না,যদি না সাওম পালনকারী তা প্রকাশ করে। 

** সাওমের দ্বারা তাকওয়া ( আল্লাহর ভয় ) অন্তরে সৃষ্টি হয়। সুরা বাক্বারা আয়াত ১৮৩

** সাওমের মধ্যে সবর এর ৩ প্রকারই উপস্থিত থাকে। এজন্যে প্রতিদান ও অনেক বেশি।

** সাওমের দ্বারা তাকওয়ার  প্রকৃত পরিক্ষা হয়।

** যে দিনগুলাতে সাওম পালন করা হয়, সেদিন গুলো অন্যান্য দিনের মত হওয়া উচিত নয় । 

** কিয়ামতের দিন সাওম ঢাল হয়ে রক্ষা করবে। যেদিন কেউ কোন কাজে আসবে না। 

 

 

বিস্তারিত (১৭মিনিট) ভিডিও লিংক  এখানে

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ৩

 ১। ইবাদতের একমাত্র লক্ষ্য - আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। মানুষকে দেখানো বা পার্থিব স্বার্থ হাসিল করা নয়।

২। দুনিয়া ও আখিরাতে সব সময় আল্লাহকে পাবো,

৩। আল্লাহর জন্য করা একান্ত, আন্তরিক, গোপনীয় আমল গুলোই একমাত্র সম্বল।

৪। বেশি বেশি ইখলাসপুর্ন, একান্ত গোপন আমল করার জন্য রামাদান শ্রেষ্ঠ সময়।

৫। আমরা নিজেরাও ভুলে যাবো আমাদের কৃত আমল্ গুলো।

৬। আমি অবশ্যই ঘুমাবো , যেদিন আমাকে আর ঘুম থেকে উঠতে হবে না।

৭। হক ইলম কে কাজে পরিনত করতে হয়।

৮। গোপন আমল- আখিরাতে আল্লাহর পুরুস্কার প্রাপ্তির সুযোগ। 

৯। বিচার দিবসে গোপন আমলের ব্যাপারে স্বরন করিয়ে দেয়া হবে।


বিস্তারিত (১৮মিনিট) ভিডিও লিংক  এখানে

ধূলিমলিন উপহার ; রামাদান পর্ব ২

১। ইবাদাত মানে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত, আর আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য আমাদের উপযুক্ত প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।

২।পাপের কারনে হৃদয়ে কালো দাগ পড়ে, এই দাগ দূর করার জন্য রামাদান উত্তম সময়।

৩। অন্তরের দাগ দূর করতে করনিয়

** কোরআন অর্থ বুঝে তেলাওয়াত করা, তাফসির পাঠ করা।

**তালাবদ্ধ অন্তরকে শৃংখল্মুক্ত করা।

**আল্লাহর অনুগ্রহ স্বরন করা

**তওবা করে অনুতপ্ত হওয়া, অতীতের ঘাটতি পুরনে চেস্টা করা।

**সালাফদের আদর্শ অনুসরন করা, তাদের সাথে নিজ নিজ অবস্থার তুলনা করা।

** দুনিয়ার নানা ফিতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া।

বিস্তারিত (১৭মিনিট) ভিডিও লিংক এখানে

ইসলাম রক্তের সম্পর্কের চাইতে দ্বীনি বা বিশ্বাসগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়েছে।

 কেউ নামাজ পড়লেই যে তার চিন্তা দ্বীনি হবে, এমন না। কেউ তার ফেইসবুক বায়োতে কুরআনের আয়াত ঝুলায়ে রাখলেই যে সে মুসলিম হয়ে যাবে এমন না, প্রতি শুক্রবার Inspire to be Islamic অথবা প্রতি দিন Proud to be Islamic পেইজের পোস্ট শেয়ার দিলেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না। 

মূল বিষয় হচ্ছে তার প্যারাডাইম, সে কোন লেন্সে দেখছে দুনিয়াকে। এই প্যারাডাইম জিনিসটা আসলেই মারাত্মক, প্রচন্ড রকমের ক্রুশাল। মানুষ কোনো কিছুই র‍্যান্ডমলি করে না, চেতনে অথবা অবচেতনে সবকিছুই তার প্যারাডাইম থেকেই আসে। আর এটার ভিত্তিতেই মানুষের সমগ্র জীবন পরিচালিত হয়। 

প্যারাডাইম হচ্ছে কোনো কিছুকে দেখার এবং বিচার করার জন্য কারো চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানদন্ডের সমষ্টি। আমার নিজের এবং মানুষের দৈনন্দিন চলা-বলায় এই জিনিসটা প্রায়ই খেয়াল করি, এবং অবাক হই। কাছাকাছি মানুষ, অথচ তাদের চিন্তার কত ফারাক। 

মানুষের উপ-মত এবং উপ-চিন্তায় ভিন্নতা থাকবে, সেটা সমস্যা না। কিন্তু মৌলিক চিন্তা এক হতে হবে, কোনো সমস্যার সমাধান এক জায়গা থেকে আসতে হবে। কিন্তু সমাধান এক জায়গা থেকে আসে না। একেক মানুষ একেক গ্রাউন্ড থেকে সমাধানের প্রস্তাব দেয়। আর এই জিনিসটাই মানুষের মৌলিক পার্থক্য নির্ধারণ করে দেয়। আপাতদৃষ্টে একই ধর্মের হতে পারে, বাহ্যিক কিছু প্র‍্যাক্টিসেও সাদৃশ্য থাকতে পারে। কিন্তু সমাধানের উৎসটা যদি এক না হয়, তাহলে একই ধর্মের এবং এমনকি কাছাকাছি থাকা স্বত্বেও এই দুজনের মধ্যে ফারাক হয়ে যায় আসমান আর যমীনের, এ মেরু আর ও মেরু। 

 বিশ্ববিদ্যালয়ের পশকিডটা প্রায়ই নামাজ পড়ে, ফেইসবুকে মাঝে মাঝে কুরআন হাদীসের ভার্সও শেয়ার করে সে, রাসূলুল্লাহর দয়াদ্রতা আর মানবিকতার কথাও মুখে চর্চা করে, ইসলাম যে মানবতা আর শান্তির ধর্ম সেটা নিয়ে বিস্তর কথা বলে। কিন্তু যখন কোনো সমস্যা সামনে আসে, তখন সমাধান হিসেবে হাজির করে গণতন্ত্র অথবা অন্য কোনো তন্ত্র। তার পলিসিগুলো আসে পশ্চিমা একাডেমিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফ্রেইমওয়ার্ক থেকে। এই কারণে ব্যাংকে চাকরি করা হারাম শুনলে এদের চোখ কপালে উঠে যায়, ধর্ষণ অথবা যিনার শাস্তি পাথর মারা অথবা দোররা মারা, চোরের হাত কাটা, সমকামীদেরকে আগুনে পুড়িয়ে শাস্তি দেয়া ইত্যাদীকে এদের কাছে বর্বরতা মনে হয়। বৈশাখ অথবা হিন্দুদের পূজায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করাকে বাড়াবাড়ি মনে হয়। 

 সম্প্রতি আত্মহত্যার কেইস দিয়ে উদাহরণ দিলে বুঝবেন আশা করি। আত্মহত্যা একটা সমস্যা। এই সমস্যার সমাধানে কেউ হাজির করছে ইসলামকে, মানুষের সাথে তাদের রবের সম্পর্ককে। অন্য কেউ হাজির করছে কনসার্টকে, ছেলেমেয়ের একসাথে বিনোদনের ব্যবস্থা করে দেয়াকে, কেউ হাজির করছে সাইকিয়াট্রিস্টকে। আবার কারো কারো থেকে কোনো সমস্যার সমাধান আসবে তাদের সামাজিকতা থেকে। 

 আবার কারো সামনে যখন বাঙ্গালীত্ব আর ইসলামের প্রশ্ন তুলবেন, সে দ্বিধায় পড়ে যাবে যে সে বাঙ্গালীত্বকে আগে রাখবে নাকি মুসলমানিত্বকে।

 এটা আমি আপাতদৃষ্টে মুসলিম প্র‍্যাক্টিসগুলা যারা করে, তাদের কথা বলছি। এদের বাস্তুগত অথবা শারিরিক অবস্থান কাছাকাছি হতে পারে, কিন্তু তাদের আদর্শিক অবস্থান যোজন যোজন দূরে। ইসলাম এই কারণেই রক্তের সম্পর্কের চাইতে দ্বীনি বা বিশ্বাসগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়েছে। যাইহোক, এইভাবে যদি আপনি দেখেন যে কোনো একজন ব্যক্তি কোনো সমস্যার সমাধান কোথা থেকে দিচ্ছে, তাহলে অনেক অনেক সহজ হয়ে যাবে জীবন। যদি সেটা ইসলাম না হয়ে অন্য কিছু হয়, তাহলে উপরে যতই ইসলামী লেবাস থাকুক না কেন, কোনো লাভ নাই।

লেখাঃ আবদুল্লাহ মাদান

কেন এমনটা হয়?

 খুবই ভালো মনের চা বিক্রেতা এক চাচা সারা দিন চা বিক্রি করার পর রাতে অবশিষ্ট চা পৌরসভার ড্রেনে ফেলে দিতেন ৷ ঊনাকে বলেছিলাম, চা টা না ফেলে সকালে গরম করে বিক্রি করলেইতো পারেন ৷ 

তিনি বললেন, বাসি চাতে কালার থাকে না ৷ গরম করলে কালো হয়ে যাবে, সকালে ভালো চা না পেলে দোকানের বদনাম হবে কাস্টমার কমে যাবে ৷ বললাম, তাহলে ঝুট দোকানে যারা নাইট ডিউটি করে তাদের দিলে ওদের রূহ দোয়া করবে, আপনারও সওয়াব হবে ৷ জবাবে তিনি হাসতে হাসতে বললেন, এদেরকে যদি এখন মাগনা চা দেই কাল থেকে এরা কেউ আর আমার দোকানে চা খেতে আসবে না ৷ উল্টো মনে মনে দোয়া করবে যেন দিনে আমার চা বিক্রি কম হয়, যাতে রাতে মাগনা খেতে পারে ৷ লোকটাকে তখন ভীষণ স্বার্থপর মনে হয়েছিলো ৷

 

 ইন্ডিয়ান হজ কমিটির পক্ষ থেকে হাজীদের খাবার পরিবেশনের পার্ট টাইম জব পেয়েছিলাম ৷ দেড়শ হাজীর খাবার আসলে অনায়াসে দুইশ জনের মাঝে বন্টন করা যায় ৷ এক বেলার খাবার অন্য বেলায় দেওয়ার নিয়ম নেই ৷ অতিরিক্ত খাবার ফেলে না দিয়ে হোটেলে কর্মরত দেশী ভাইদের দিতে লাগলাম ৷ শেষের দিন হাজীরা চলে যাবে বিধায় খাবার একটু কম এসেছিল ৷

 ভাইদের বললাম, ভাই, আজকে খাবার কম এসেছে ৷ আপনারা হয় অপেক্ষা করেন, না হয় অন্য ব্যবস্থা করেন ৷ এরপরই প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, আগে না করলেন না কেন? আপনার হাজীগো লাইগা আমরা বইসা থাকুম? আপনার লাগি কি আমরা পকেটে পয়সা নিয়া বইসা আছি? কাইল কইলেইতো খানা নিয়া আইতাম, ইত্যাদি ইত্যাদি ৷ 

 

 দূর সম্পর্কের এক ভাইয়ের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বিয়েতে সমস্যা হচ্ছিল বিধায় আব্বা তাকে কিছু জায়গা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন ৷ যে সময় অনুমতি দিয়েছিলেন সে সময়ে ভাইয়ের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না ৷ সামর্থ্য হওয়ার পর তাকে তিনটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম জায়গাটা ক্রয় করতে, না হয় এর বদলে অন্য জায়গা দিতে অথবা ছেড়ে দিতে ৷ তিনি কোনটাতেই রাজি হলেন না ৷

 

 পরিচিত এক সেলুনে চুল কাটানোর পর একশত টাকার একটা নোট দেওয়ার পরেও ভাইটি মুখ বেজার করে রাখতো ৷ অপরিচিত সেলুনে একশ টাকার নোট দেওয়ার পরে ষাট টাকা ফিরিয়ে দিয়েছিল ৷ দশ টাকা বখশিষ দেওয়ার পর তার মুখে খুশির বন্যা বয়ে গিয়েছিল ৷ পরিচিত সেই সেলুন দোকানদার এখন দেখলে বলে, ভাই দেখি আগের মতো নাই ৷

 নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ দেওয়ার পরেও পরিচিত অটোওয়ালা ভাইদের মুখ কালো হয়ে থাকে ৷ অপরিচিত অটোওয়ালাদের নির্ধারিত ভাড়া থেকে পাঁচ-দশ টাকা বেশি দিলে খুশিতে চোখমুখ ঝলমল করে উঠে ৷

 

 কেন এমনটা হয়?

 

 অতিরিক্ত পেতে পেতে মানুষ তার ন্যায্য সীমা ভুলে যায় ৷ মনে করে অতিরিক্ত পাওনাটা তার অধিকার ৷ যখনই এই অধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন মানুষ ভাবে লোকটা কত স্বার্থপর ৷ একবারও নিজের সীমার হিসাব কষে না ৷ 

এক সময় যেসব ভালো মানুষকে বদলে যেতে দেখে মনে মনে স্বার্থপর ভাবতাম, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী৷  

 কেউ জন্মগতভাবে স্বার্থপর, কেউ অতিরিক্ত পেয়ে স্বার্থপর হয়ে যায়, আবার কেউ নিজের ন্যায্য পাওনা বুঝে নিতে গিয়ে স্বার্থপর হয় ৷ 

জন্মগত স্বার্থপরদের কখনো বদলানো যায় না ৷ 

মায়ার বশবর্তী হয়ে আমরা যাদের প্রাপ্য সীমার অতিরিক্ত পূরণ করে স্বার্থপর হিসেবে গড়ে তুলি, তাদের সংশোধন করার দায়িত্ব আমাদেরই ৷ না হয় একদিন তারা আমাদেরই স্বার্থপর হিসেবে চিহ্নিত করবে ৷

দুনিয়ার জীবনটা ক্ষণিকের, আর আখিরাত অনন্তকালের

 আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা মানুষের জন্ম এবং মৃত্যুর মাঝখানে যে সময়টা দিয়েছেন সেটা মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য - কে ভালো কাজ করে। 

 জীবনের যে মূহুর্তটা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যায় করা হবে - ওইটাই আসল। বাকি সব সময়ের জন্য মানুষ আখিরাতে আফসোস করবে। আমরা কেউ কুরআন পড়ব - এটাতে সাওয়াব আছে।কেউ কুরআন পড়াব - এটাতে আরো বেশি সাওয়াব আছে।  কেউ কুরআন নিয়ে চিন্তা করব - সেটা লিখব তাতেও সাওয়াব আছে। কেউ টাকা কামাই করবে এবং যারা কুরআন পড়ছে এবং পড়াচ্ছে তাদের সাপোর্ট করবে - এটাতেও সাওয়াব আছে। 

যারা কুরআনের এইসব খেদমত করবেন তারা ২৪ ঘন্টা কুরআন নিয়ে থাকবেন না। তাঁরা স্ত্রী-সন্তানদের সময় দেবেন - তাতেও সাওয়াব আছে। 

 যে উপরের কোনো কিছুই করছে না, চিল করছে বা আরাম-আয়েশ করছে এবং সেটাকী পূঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বলে মনে করছে সে কি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তার সময়গুলোর জবাব দিতে পারবে?

 মানুষের জীবন পরিশ্রম করার জন্য। বিশ্রাম যতটুকু দরকার, শরীর ক্লান্ত হয়ে নিয়ে নেবে। আমরা টিভি, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স বা পর্ন দিয়ে সময়টা এবং শরীরটা নষ্ট না করলেই হলো। 

সাগরপারে বসে আয়েশ করা - কাজ না করা, শুধুই স্ত্রী-সন্তান-বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ-ফূর্তি করা - এগুলো জান্নাতের কাজ। 

 জান্নাতে যা করার কথা সেটা যখন আপনি দুনিয়াতে করতে চাবেন - সম্ভাবনা আছে আপনি জান্নাতে যেতে যা করা দরকার সেটা করতে পারবেন না। অথচ দুনিয়ার জীবনটা ক্ষণিকের, আর আখিরাত অনন্তকালের। CP

বিপদ

 যখন কোন ব্যাক্তি বা জাতি সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,

 

 যুলুম ও সীমালংঘন করতে থাকে, 

 

অন্যদিকে তার উপর অনুগ্রহ বর্ষিত হতে থাকে, 

 

তখন  বুঝতে হবে, আল্লাহ তাকে কঠিনতর পরিক্ষার সম্মুখীন করেছেন।

 

 এবং তার উপর আল্লাহর ক্রোধ চেপে বসেছে। 


আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন। আমিন


০১/০৭/২০২৩

জীবন_ ভাবনা সমগ্র

 ১। প্রতি শুক্রবার এবং আরাফার দিন মুসলমান দের জন্য  পুজি সংগ্রহের বড় সু্যোগ।

২। দুনিয়াতে যা কিছু করছি তার সব আখিরাতে হিসাব নিকাশের জন্য  সংরক্ষিত রয়েছে। তাই প্রতি মুহুর্তে আখেরাত ও কেয়ামতের চিন্তা থেকে গাফেল হওয়া যাবে না।


৩। বিপদে সবর করার থেকে আরাম আয়েশে থেকে হক আদায়ে দৃঢ় পদ থাকা অধিক কঠিন।


৪। যে ভয় করে, সেই উপদেশ গ্রহন করে।


৫। নিশ্চয়ই আপনার রবের পাকড়াও বড়ই কঠিন। (বুরুজ আয়াত ১২)


২০/০৬/২০২৩

সাহাবাদের ২৫ টি প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উত্তর

 


১. প্রশ্নঃ আমি ধনী হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, অল্পতুষ্টি অবলম্বন কর; ধনী হয়ে যাবে।
 
২. প্রশ্নঃ আমি সবচেয়ে বড় আলেম (ইসলামী জ্ঞানের অধিকারী) হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, তাক্বওয়া (আল্লাহ্ ভীরুতা) অবলম্বন কর, আলেম হয়ে যাবে।
 
৩. প্রশ্নঃ সম্মানী হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, সৃষ্টির কাছে চাওয়া বন্ধ কর; সম্মানী হয়ে যাবে।
 
৪. প্রশ্নঃ ভাল মানুষ হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, মানুষের উপকার কর।
 
৫. প্রশ্নঃ ন্যায়পরায়ণ হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, যা নিজের জন্য পছন্দ কর; তা অন্যের জন্যেও পছন্দ কর।
 
৬. প্রশ্নঃ শক্তিশালী হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, আল্লাহর উপর ভরসা কর।
 
৭. প্রশ্নঃ আল্লাহর দরবারে বিশেষ মর্যাদার অধিকরী হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, বেশী বেশী আল্লাহকে স্মরণ (জিকির) কর।
 
৮. প্রশ্নঃ রিযিকের প্রশস্ততা চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, সর্বদা অযু অবস্থায় থাকো।
 
৯. প্রশ্নঃ আল্লাহর কাছে সমস্ত দোয়া কবুলের আশা করি!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, হারাম খাবার হতে বিরত থাকো।
 
১০. প্রশ্নঃ ঈমানে পূর্ণতা কামনা করি!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, চরিত্রবান হও ৷
 
১১. প্রশ্নঃ কেয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে গুনামুক্ত হয়ে সাক্ষাৎ করতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, জানাবত তথা গোসল ফরজ হওয়ার সাথে সাথে গোসল করে নাও।
 
১২. প্রশ্নঃ গুনাহ্ কিভাবে কমে যাবে?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, বেশী বেশী ইস্তেগফার (আল্লাহর নিকট কৃত গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা) কর।
 
১৩. প্রশ্নঃ কেয়ামত দিবসে আলোতে থাকতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, জুলুম করা ছেড়ে দাও।
 
১৪. প্রশ্নঃ আল্লাহ্ তা’য়ালার অনুগ্রহ কামনা করি!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, আল্লাহর বান্দাদের উপর দয়া-অনুগ্রহ কর।
 
১৫. প্রশ্নঃ আমি চাই আল্লাহ্ তা’য়ালা আমার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখ।
 
১৬. প্রশ্নঃ অপমানিত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে চাই ?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, যিনা (ব্যভিচার) থেকে বেঁচে থাকো।
 
১৭. প্রশ্নঃ আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) এর নিকট প্রিয় হতে চাই ?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, যা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের (সাঃ) এর নিকট পছন্দনীয় তা নিজের জন্য প্রিয় বানিয়ে নাও।
 
১৮. প্রশ্নঃ আল্লাহর একান্ত অনুগত হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, ফরজ সমূহকে গুরুত্বের সহিত আদায় কর।
 
১৯. প্রশ্নঃ ইহ্সান সম্পাদনকারী হতে চাই!
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, এমন ভাবে আল্লাহর এবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ অথবা তিনি তোমাকে দেখছেন।
 
২০. প্রশ্নঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! (সাঃ) কোন বস্তু গুনাহ্ মাফে সহায়তা করবে?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন,
ক) কান্না। (আল্লাহর নিকট, কৃত গুনাহের জন্য)
খ) বিনয়।
গ) অসুস্থতা।
 
২১. প্রশ্নঃ কোন জিনিষ দোযখের ভয়াবহ আগুনকে শীতল করবে?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, দুনিয়ার মুছিবত সমূহ।
 
২২. প্রশ্নঃ কোন কাজ আল্লাহর ক্রোধ ঠান্ডা করবে?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, গোপন দান এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা।
 
২৩. প্রশ্নঃ সবচাইতে নিকৃষ্ট কি?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, দুশ্চরিত্র এবং কৃপণতা।
 
২৪. প্রশ্নঃ সবচাইতে উৎকৃষ্ট কি?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, সচ্চরিত্র, বিনয় এবং ধৈর্য্য।
 
২৫. প্রশ্নঃ আল্লাহর ক্রোধ থেকে বাঁচার উপায় কি?
উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, মানুষের উপর রাগান্বিত হওয়া পরিহার কর।

বাচ্চাদের নামাজ পড়া বা মসজিদে যাওয়ার প্র্যাকটিস করা

বাচ্চাদের নামাজ পড়া বা মসজিদে যাওয়ার প্র্যাকটিস করা নিয়ে এবং অভ্যস্ত করার ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।
 বিভিন্নভাবে তাকে বোঝাতে হবে, তার সময় বয়স, তার আগ্রহ ইত্যাদির কথা মাথায় রেখে সময় নিয়ে বুঝিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
 
কোন বিষয়ে তার আগ্রহ বেশি সেটার সাথে মসজিদকে রিলেট করতে হবে।
 ছোট ছোট ইসলামী কার্টুন ইসলামী গান যেগুলো মসজিদে যেতে আগ্রহী করে তোলে উৎসাহী করে তোলে সেগুলো শোনানো, দেখানো যেতে পারে। 
এমন কোন গেম আছে কিনা আমার জানা নেই তবে থাকলে সেটিও খেলানোর চেষ্টা করা যেতে পারে যাতে সে আনন্দের মাধ্যমে এবং তার আগ্রহের বিষয় বস্তুর মাধ্যমেই মসজিদে যাওয়া কে পছন্দ করে।
 
আমরা অনেকেই অধৈর্য হয়ে যাই কয়েকবার বললে এবং ছেলে কথা না শুনলে তার উপর ছেড়ে দিতে চাই। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা উচিত হযরত নূহ আলাইহিস সালামের কথা তিনি তার ছেলেকে শত শত বছর ধরে দাওয়াত দিয়ে গেছেন।

 

নিজেকে আল্লাহর একান্ত মুখলিস, অনুগত বান্দা হিশেবে প্রতিষ্ঠা করুন। নিজের আমলকে বাড়িয়ে দিন। পাপগুলো থেকে বেরিয়ে এসে ইবাদাত-আমলে নিজেকে এমন স্থানে উন্নীত করুন যেখানে পৌঁছাতে পারলে আপনার অনুপস্থিতিতে আল্লাহ আপনার সন্তান, আপনার পরিবার-পরিজনদের দেখভালের জন্য একজন খিযিরকে পাঠিয়ে দেবেন।

মৃত্যুর কথা চিন্তা করলে আমরা স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।
 নিজেদের পাপের কথা ভেবে, যে অনিশ্চিত গন্তব্যে পাড়ি জমাতে হবে, কেমন হবে সেখানকার জীবন— সেসব ভেবে।
 
তবে, আরো একটা ব্যাপারেও দুশ্চিন্তা গ্রাস করে আমাদের, আর তা হলো— আমাদের মৃত্যুর পর আমাদের পরিবারের কী হবে? আমার অনুপস্থিতিতে কে হাল ধরবে আমার সাজানো-গোছানো সংসারের?
যদিও চিন্তাটা অমূলক, তাকদির-বিরোধি এবং তাওয়াক্কুল-পরিপন্থী, তথাপি অধিকাংশ মানুষ মৃত্যুর কথা ভাবতে গেলেই শয়তান এই চিন্তাটাকে তার সামনে এনে হাজির করে।
 
যদি আগামিকাল আপনি মারা যান, আপনার ছোট্ট বাচ্চাটার কী হবে তাহলে? তার দেখভাল কে করবে? কে তাকে আগলে রাখবে পরম মমতায়?
যদি আপনি মারা যান, আপনার বিধবা স্ত্রী কিভাবে কাটাবে বাকিটা জীবন? আপনার বৃদ্ধা মা আর বিছানায় পড়ে থাকা অসুস্থ পিতা— কী হবে তাদের সকলের?
সাধারণত এমন চিন্তায় আমরা ঘাবড়ে যাই। ভবিষ্যতের এক ঘোর অনিশ্চয়তার আঁধার ঝেঁকে বসে আমাদের মনে।
 
 
তবে, এই ধরণের ভাবনা থেকে বাঁচতে কুরআন আমাদের একটা সুন্দর সমাধান বাতলে দিতে পারে।
সমাধানটার জন্য আমরা চলে যেতে পারি সূরা আল কাহাফের মূসা আলাইহিস সালাম এবং খিযির আলাইহিস সালামের ঘটনায়। 
 
আমরা জানি— খিযির আলাইহিস সালামের একের পর এক অদ্ভুত কান্ড দেখে মুসা আলাইহিস সালাম আশ্চর্যান্বিত হয়ে পড়ছিলেন। খিযির আলাইহিস সালাম এমনসব কাজ করছিলেন যার আপাতদৃষ্টিতে কোন যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা নেই। দরিদ্র মাঝির নৌকা ফুঁটো করে দেওয়া, একটা বালককে হত্যা করা আর একটা জনপদ থেকে তিরস্কিত হয়েও সেখানকার প্রায় ভেঙে যাওয়া দেয়াল মেরামত করে দেওয়ার মতো কাজ করে তিনি চমকে দিচ্ছিলেন মুসা আলাইহিস সালামকে।
 
এদিকে, সবকিছু ধৈর্য সহকারে পর্যবেক্ষণ করা এবং বিনা বাক্য-ব্যয়ে দেখে যাওয়ার শর্তে খিযির আলাইহিস সালামের সফর-সাথী হওয়ার পরেও বারংবার ধৈর্যহারা হয়ে পড়ছিলেন মুসা আলাইহিস সালাম। তিনি প্রতিটি ঘটনায় হতবাক হচ্ছিলেন আর প্রশ্ন করে যাচ্ছিলেন খিযির আলাইহিস সালামকে।
ওই সফরে যে তিনটি অবাক কান্ড খিযির আলাইহিস সালামের হাতে সংঘটিত হয়েছিলো তার মধ্যে একটি ছিলো— একটা জনপদে খাবার চেয়ে তিরস্কিত হওয়ার পরেও, ওই জনপদের-ই একটা প্রায় ভেঙে যাওয়া, ভগ্ন দেয়ালকে তিনি নিজের হাতে মেরামত করে দিয়েছিলেন।
 
খিযির আলাইহিস সালামের এই কান্ড দেখে অবাক হলেন মুসা আলাইহিস সালাম। তিনি ভাবলেন, 'আরে, এই লোকগুলোর কাছে আমরা একটু খাবার চাইলাম তা তো দিলো-ই না, উপরন্তু তিরস্কার করে আমাদের তাড়িয়ে দিলো। কিন্তু এই লোক কী-না সেই অকৃতজ্ঞ মানুষগুলো উপকারে লেগে গেলো! উপকার করুক, অন্তত তার পারিশ্রমিক তো নিতে পারে যা দিয়ে আমরা খাবার কিনে খেতে পারতাম'।
খিযির আলাইহিস সালামকে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রশ্ন করে বসেন যে— কেনো এই অকৃতজ্ঞ লোকগুলোর ভগ্ন দেয়াল তিনি মেরামত করে দিলেন বিনা পারিশ্রমিকে? এই প্রশ্নের উত্তরে খিযির আলাইহিস সালাম বলেছিলেন,
'আর ঐ দেয়ালটির বিষয় হলো— তা ছিল ঐ জনপদের দু’জন ইয়াতীম বালকের। তার নীচে তাদের জন্য কিছু সম্পদ রক্ষিত ছিলো। তাদের পিতা ছিলেন একজন সৎকর্মশীল ব্যক্তি। তাই আপনার প্রতিপালক চাইলেন— বালকদ্বয় যৌবনে উপনীত হোক আর তাদের গচ্ছিত সম্পদ বের করে নিক। এটা তাদের ওপর আপনার প্রতিপালকের রহমত বিশেষ'- আল কাহাফ ৮২
 
বাচ্চা দুটো ছিলো ইয়াতীম। তাদের পিতা মারা যাওয়ার আগে তাদের জন্য কিছু সম্পদ গোপনে ওই দেয়ালের নিচে পুঁতে রেখে যান। কিন্তু, এই দেয়াল যদি সত্যি সত্যি ভেঙেই পড়ে, তাহলে তার নিচে থাকা সম্পদগুলো সকলের সম্মুখে চলে আসবে এবং তা বালকদের দেওয়ার বিপরীতে, অন্যেরা ভাগ-বাটোয়ারা করে সাবাড় করে ফেলবে। ফলে, বালকেরা যথেষ্ট বড় না হওয়া অবধি আল্লাহ সেই সম্পদকে উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া থেকে আটকে দিলেন।
 
আচ্ছা, খেয়াল করে দেখুন তো, বাচ্চা দুটোর ওপর আল্লাহর এই যে বিশেষ রহমত, তারা না চাইতেও তাদের সম্পদের এই যে রক্ষণাবেক্ষণ— আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা এটা কেনো করলেন?
উত্তরটা উপরিউক্ত আয়াতের মধ্যেই আছে। ওই আয়াতের একটা জায়গায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেছেন,
'তাদের পিতা ছিলো একজন সৎকর্মশীল ব্যক্তি'।
 
বালকদ্বয়ের প্রতি আল্লাহর এই বিশেষ অনুগ্রহ তাদের কর্মের কারণে আসেনি, বরং তাদের বাবার কর্মের কারণেই এসেছে। বাচ্চা দুটোর সম্পদকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা রক্ষা করেছিলেন এই জন্যে যে— তাদের বাবা ছিলেন একজন নেককার ব্যক্তি। একজন সালেহ বান্দা। তিনি ছিলেন আল্লাহর একনিষ্ঠ ইবাদাতকারী। ফলে, তিনি মারা যাওয়ার পরেও তার বাচ্চাদের ভবিষ্যত রক্ষার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা খিযির আলাইহিস সালামের মতো একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তিকে নিয়োগ করে দিলেন।
যদি আজ আপনার মৃত্যু হয়, আগামীকাল থেকে আপনার পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণ কে করবে সে ভয়ে কি আপনি ভীত?
আপনার মৃত্যুর পরে আপনার পরিবারের কী হাল হবে— তা কি আপনাকে শঙ্কিত করে?
আপনার মৃত্যু হলে আপনার বৃদ্ধা মা'কে দেখে রাখবে কে, আপনার অসুস্থ বাবার প্রয়োজন কে মেটাবে— সেই চিন্তায় কি আপনি কাতর?
 
মৃত্যু হলে, আপনার জমানো সম্পদ সন্তানদের কাজে আসবে কী-না, তা-ও কি আপনাকে চিন্তিত করে?
আপনার মৃত্যুর পর, সন্তানদের ওপর যদি কোন বিপদ আসে, তা কে সামলাবে, পরিবারে কোন বিপদ হলে তা কে দেখবে তা নিয়েও কি আপনি পেরেশান?
 
যদি উপরের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর 'হ্যাঁ' হয়, তাহলে সেই ইয়াতীম বালকদের ঘটনাটাকে পুনরায় স্মরণ করুন যেখানে তাদের জন্য রেখে যাওয়া সম্পদকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা নিরাপত্তা দান করেছিলেন, রক্ষা করেছিলেন কেবলমাত্র একটা কারণে— তাদের পিতার নেক আমল।
 
যদি চান যে আপনার মৃত্যুর পর আপনার সন্তানাদি, আপনার পরিবার সহ সবকিছুর দায়-দায়িত্ব আল্লাহ নিক, তাহলে নিজেকে আল্লাহর একান্ত মুখলিস, অনুগত বান্দা হিশেবে প্রতিষ্ঠা করুন। নিজের আমলকে বাড়িয়ে দিন। পাপগুলো থেকে বেরিয়ে এসে ইবাদাত-আমলে নিজেকে এমন স্থানে উন্নীত করুন যেখানে পৌঁছাতে পারলে আপনার অনুপস্থিতিতে আল্লাহ আপনার সন্তান, আপনার পরিবার-পরিজনদের দেখভালের জন্য একজন খিযিরকে পাঠিয়ে দেবেন।
 
 
Fb CP 

অপকারী জ্ঞান আর অহংকার থেকে পানাহ চাই।

 

কেউ গায়ক ছিল, তবু নেশা ভুলে, রুটিরুজির পথ বন্ধ করে গান ছেড়ে এলো। মাশাআল্লাহ, আল্লাহ তার জন্য দ্বীনের পথ আবাদ করুন। 
 
অন্যদিকে কেউ কুরআনিক সায়েন্স পড়ে মানুষকে ইসলামের নতুন সংজ্ঞা শেখায়, একই সাথে পাবলিক পোস্ট দিয়ে বলিউডি নাচগানের বিবরণ দেয়, দেশের মাটিতে বলিউডি মুভি বানানোর স্বপ্ন দেখায়! বাহ, ইসলামের কী "উন্নত" সংজ্ঞা শিখছে সবাই তার কাছে, আমি চিন্তা করি। 
 
দ্বীন এত সস্তা না।
 দিনশেষে যে যার পথ বেছে নিবে। সমস্ত জাহেলিয়াতকে সাদরে সম্ভাষণ করা লোকের অনেক খ্যাতি, অনেক অনুসারী থাকতে পারে, কিন্তু তাই বলেই তার শেখানো বুলি ইসলাম হয়ে যায় না।
 আল্লাহর দ্বীন আল্লাহই হেফাজত করেন, করবেন।
 খড়কুটোর মতো কোনো অচেনা লোকের মাধ্যমে দিয়ে হলেও করবেন। 
যে হয়তো কুরআনিক সায়েন্সে পড়ে নাই, কোনো সাবজেক্টে পি এইচ ডি প্রাপ্ত না, কিন্তু তাকে দেখলে আপনি বুঝবেন সে নবীজির ﷺ সুন্নত বুকে ধারণ করেছে। নবীজির ﷺ দ্বীন হলো সেই দ্বীন যা দেখে জাহেলিয়াত ভয়ে কেঁপে উঠেছিল, সেই দ্বীন যে দ্বীন পালনের দৃঢ়তা দেখে শত্রুও তার শত্রুতা ভুলে ইসলাম গ্রহণ করেছে।
 
 আর আমরা আছি, জাহেল দুনিয়ার সমস্ত কিছুর সাথে তাল মিলিয়ে সেটাকেই দ্বীন মনে করি, সেটাকেই দ্বীন বলে শেখাতে চাই।
 আমাদের নিজেদেরই দ্বীন পালনের কোনো দৃঢ়তা নাই। 
খুব পড়াশোনা আর অভিজ্ঞতার কথা বলে উল্টাই, কিন্তু এইটুকুও বুঝি নাই যে হিজাব কীভাবে করতে হবে, বলিউডি নাচগান দেখা কেন জায়েজ না এইটুকু মাথায় ঢুকে নাই,
 এই সহজ ব্যাপারটা বুঝি নাই যে ফেমিনিজমের তালে তালে নারী-পুরুষ সমঅধিকারের বুলিতে বিশ্বাস আনা দ্বীনের কথা না।
 অথচ যার দ্বীন নিয়ে এত জ্ঞান নাই, যে ইসলাম পালন করতে চায় মাত্র দুইদিন হইসে, সে-ও বোঝে এইগুলা দ্বীন না। কারণ সে নিজের সাথে সৎ, আল্লাহর সাথে সৎ। 
 
কোনো কোনো সময় জ্ঞানও মানুষের জন্য ফিতনা হয়ে যায়। 
পশ্চিমাদের শেখানো ইসলাম নিয়ে অহংকার করতে গিয়ে পুরোনোদিনের আলেমদের বোকা মনে হয়। আসলে অহংকার মানুষকে পথভ্রষ্ট করে ফেলে। 
ইবলিসও অহংকারের কারণেই পথভ্রষ্ট হইসিল। এমন অপকারী জ্ঞান আর অহংকার থেকে পানাহ চাই। আল্লাহর উপর ঈমান নিয়ে রাসূলের ﷺ পথে মরতে চাই। আমীন।
 
{CP}
 
কয়েকদিন আগে একটা ছোট সিরিজ দেখেছিলাম।নাথিং ইম্পর্ট্যান্ট!অস্থির চিন্তাগুলোকে ডাইভার্ট করার জন্য হালকা কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকা আর কি!
 
আমেরিকার ছোট একটা বাচ্চা ও তার পরিবারকে নিয়ে ঘটনা।বাচ্চাকে নিয়ে ছিলো বলে প্যারেন্টিংও ফোকাসড ছিলো।
তাদের প্যারেন্টিং এর ব্যাপারগুলো আমাকে খুবই নাড়া দিয়েছে! নিজের বাচ্চাগুলোকে নিয়ে স্ট্রাগল করে চলেছি,তাই হয়ত!
 
আরেকটা ব্যাপার বেশ নাড়া দিয়েছে আমাকে,তা হলো,প্যারেন্টিং এর জন্য ওরা যা করছে,তার শিক্ষা ইসলাম আরো অনেক আগেই আমাদের দিয়েছে! কিন্তু মুসলিম হয়েও আমরা তা ফলো করতে পারছিনা! 
 
তাই ভাবলাম,প্যারেন্টিং নিয়ে যা শিখলাম,তা পয়েন্ট আকারে লিখে রাখি।আল্লাহ যেন আমাকে একজন ভালো প্যারেন্ট হওয়ার তাওফিক দেয়।
 
.
বাচ্চাকে বাচ্চা নয়, একজন বড়, বুঝদার মানুষের মতো ট্রিট করা।
অর্থাৎ ঘরের একজন বড় মানুষের সাথে আমরা যেমন আচরন করি,যেভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলি,নিজের বাচ্চার সাথেও সেরকম আচরণ করা।
 সে বাচ্চা,কিন্তু সেও একজন পরিপূর্ণ মানুষ! তার অনুভূতি একজন বড় মানুষের চেয়ে কম তো নয়ই বরং আরো নাজুক! সে আমার সন্তান,তাই বলে তার সাথে যেমন খুশি তেমন আচরন করতে পারিনা! আমি তার মালিক না! আল্লাহ তার মালিক! সে জাষ্ট আমার কাছে আল্লাহর আমানত! আমি যেমন আল্লাহর বান্দা,সে ও আল্লাহর বান্দা! 
 
এই একটা পয়েন্টের ভেতরেই আসলে অনেক কিছু চলে আসে! ঘরের একজন বড় মানুষের সাথে, আমরা অকারণ চিৎকার, চেঁচামেচি, নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া(এটা করতেই হবে তোমাকে, এখনই,টাইপ), আরেকজনের উপর করা রাগ ঝাড়া(যেটা আমরা মায়েরা প্রায়ই করি! জামাইর উপর করা রাগ বাচ্চার উপর ঝাড়ি!),বকা দেওয়া বা মার লাগানো এসব কোনোদিনই করতে পারব না! কিন্তু বাচ্চাদের সাথে ঠিকই করি! 
 
২.
বাচ্চার সাথে অনেক, অনেক কথা বলা!
  যেকোনো কিছু নিয়েই তা হতে পারে! যেকোনো টপিকে!
এবং মনোযোগ দিয়ে বাচ্চার কথা শোনা,তা যত ছোট ব্যাপার নিয়েই হোক না কেন!
 আমার কাছে ছোট ব্যাপার,আমার বাচ্চার কাছে হয়ত তা বড় কিছু!
 নিজের আনন্দ বা কষ্ট নিয়েও বাচ্চার সাথে কথা বলা যেতে পারে!তাদের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে!যেমন,আমি আমার বড় ছেলের সাহায্য চাচ্ছিলাম যে,আমি তোমাদের সাথে রাগ করতে চাই না,কিন্তু মা পারছি না!তোমদের কাজে আমার সবর ভেঙে যায় বারবার! প্লিজ আমাকে হেল্প করো! 
 
৩.
পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহনেও বাচ্চাদের রাখা,তাদের মতামত শোনা। 
এতে বাচ্চারা অনুভব করে যে,তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে! সেও পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।এতে সে দায়িত্ব নেওয়া শেখে।
 
৪.
বাচ্চাদের নিজেদের কাজ নিজেদের করতে শেখানো। 
এর পাশাপাশি ঘরের কাজও বয়স অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া।তুমি এই পরিবারের, এই ঘরের একজন সদস্য।তাই ঘরটাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে তোমাকেও অংশগ্রহণ করতে হবে! সবাই মিলেই তো পরিবার! 
 
৫.
বাচ্চাদের গায়ে কক্ষনোই হাত না তোলা।
 বাচ্চাদের কাজে রাগ হলেও যথাসম্ভব ঠান্ডা থাকার চেষ্টা করা।বকা দেওয়ার সময় ভাষার ব্যবহারে সাবধান থাকা।একান্তই না পারলে স্রেফ বাচ্চার সামনে থেকে সরে যাওয়া।এভাবে বলে যে,তোমার কাজে আমার রাগ হচ্ছে।আমি এখন তোমার সামনে থেকে সরে যাচ্ছি।এটা নিয়ে পরে কথা বলব তোমার সাথে।
তারপর মাথা ঠান্ডা হলে বাচ্চার সাথে সে ব্যাপারে কথা বলা।বাচ্চাকেও ভাবতে বলা যে,সে যেই কাজটা করেছে,তা ঠিক হয়েছে কিনা।
 
৬.
বাচ্চাকে "এটা করো"," ওটা করো" না বলে,কেন কাজটা করতে হবে,এটা সহ বুঝিয়ে বললে,সেই কাজ বাচ্চারা মন থেকে করার চেষ্টা করে। 
 
 এটার জন্যেও আসলে বাচ্চাদের সাথে মন খুলে কথা বলার প্রয়োজন।
 
বাচ্চার সাথে সম্পর্কটা এমন রাখার চেষ্টা করতে হবে,যেকোনো পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে মানসিক এবং মোরাল সাপোর্ট দিতে হবে যেন যেকোনোকিছুতে বাচ্চা বন্ধুবান্ধব বা এমন কারো কাছে ছুটে না যেয়ে আপনার কাছেই ছুটে আসে!
 
 বাচ্চা অপরাধ করলে একগাদা বকা দিয়ে দিলে সে পরবর্তীতে তার অপরাধ আপনার থেকে লুকাবে।কিন্তু যদি বুঝিয়ে বলেন,কেন তার কাজটা ভুল হয়েছে এবং আপনি কষ্ট পেয়েছেন,তাহলে বরং সে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য স্যরি ফিল করবে।
 
৭.
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার প্রচলন করা। 
ভুল হলে স্যরি বলতে দ্বিধা না করা।বাচ্চার কাজে খুশি হলে জাযাকাল্লাহু খাইরান / ধন্যবাদ বলা,বাচ্চার প্রশংসা করা,বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা বা সন্তান হিসেবে তাকে পেয়ে আপনি গর্বিত, এটা প্রকাশ করা খুব জরুরি!
বাচ্চাকে একবার বকা দিলে, পাঁচবার আদর করে দিবেন।যেন সে বকাটা ভুলে যায়,ভালোবাসাটা মনে রাখে! 
 
৮.
একসাথে পারিবারিক সময় কাটানো এবং প্রতিটা বাচ্চার সাথে আলাদা করে সময় কাটানো। 
 
এটা খুব এফেক্ট করে বাচ্চাদের সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে!
যেমন,একসাথে সবাই মিলে রাতের খাবার খাওয়া আর টুকটাক গল্প করা।
সবার দিন কেমন কাটলো,সেই খোঁজ নেওয়া।সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়াতে যাওয়া।অন্তত একটু রিকশায় করে ঘুরে আসা বাচ্চাকে নিয়ে আর পুরোটা সময় বাচ্চার সাথে কথা বলা,তার কথা শোনা।
বাবা একটা বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে গেলে মা আরেকটা বাচ্চার সাথে ঘরে একটা কিছু গেইম খেলল বা দুজন মিলে কিছু বানালো আর গল্প করল!
এভাবে অল্টারনেট করে বাবা, মা দুজনে প্রতিটা বাচ্চার সাথে আলাদা কোয়ালিটি টাইম কাটানো।
 
দুনিয়াটা খুব র্যাপিডলি চেঞ্জ হচ্ছে।এখন একটা বাচ্চার লালনপালনে আমরা যেসব অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছি,আমাদের বাবা মা বা আমাদের দাদা দাদীর সময় অবস্থা অন্যরকম ছিলো! এই জেনারেশনকে আল্লাহ এই সময়ের জন্য উপযুক্ত করেই তৈরি করেছেন! তাই প্যারেন্টিং এর বিষয়টাকে ছোট করে দেখলে চলবে না!
বাবা মা দুজনকেই এই কাজে অংশ নিতে হবে! 
আর আল্লাহর কাছে অনেক, অনেক দুয়া করে যেতে হবে প্রতিনিয়ত! সন্তানের জন্য করা বাবা মায়ের দুয়া আল্লাহ কখনোই ফিরিয়ে দেন না।
সেই ছোট ছেলেটার একটা কথা আমার খুব কানে বাজে! ও ওর মা কে বলেছিলো,এই পৃথিবীতে ৭০০মিলিয়ন মানুষ, কিন্তু তুমিই আমার জন্য পারফেক্ট মা! তাই তো স্রষ্টা তোমাকেই আমার মা বানিয়েছেন!
এই জীবনে আমার বাচ্চারা কোনোদিন আমাকে নিয়ে এমন ভাববে কিনা জানিনা! আমার চেষ্টা করে যেতে দোষ কি?! আল্লাহ আমাকে তাওফিক দিক,আল্লাহর এই বান্দাদের যথাযথ তারবিয়ত দেওয়ার।
-তাহমীনা আপু ( আল্লাহ ওনার সন্তানদের সদকায়ে জারিয়া হিসেবে কবুল করুন এবং তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দিন।)

 Post link

।।। সালাম নিয়ে কিছু কালাম ।।। - উস্তায আব্দুল্লাহ আল মাসউদ


ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলাম। সিএনজি থেকে নেমে হাঁটছি। 
বাজার পার হয়ে একটু সামনে বাড়তেই গ্রামের শুভ্রদাড়ির একজন মুরুব্বি সামনে পড়লেন। তাকে সহাস্যমুখে সালাম দিলাম,
- আসসালামুআলাইকুম
- ওয়ালাইকুমুসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। 
 
তার উত্তর নিয়ে পরে আবার পাল্টা সালাম দেওয়া দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। উত্তর দিবো কি দিবো না ভাবতে ভাবতেই তিনি আমাকে পেছনে ফেলে সামনে চলে গেলেন। আমি কিছু না বলেই আবার হাঁটা শুরু করলাম। 
 
বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে যোহরের নামাজ আদায় করলাম। তারপর খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে শরীরটা এলিয়ে দিলাম খাটে। এবার একটু বিশ্রাম করা যাক। বিশ্রামের সময়টাতে যতোক্ষণ না ঘুমঘুম ভাব না আসে, ততোক্ষণ সাধারণত কোন লেকচার শুনতে থাকি। ল্যাপটপটা ওপেন করে একটা লেকচার প্লে করলাম। ইয়ারফোন কানে গুঁজে চোখ বন্ধ করে বালিশে মাথা ঠেকালাম।
 
লেকচারার একজন উর্দুভাষী। তিনি ডালাসে এসে কথা শুরু করলেন এভাবে,
- ইস স্টেজ পর মউজুদ মেরে হারদিল আযীয দোস্ত, আওর ইস নিশাস্ত কা নাজেমে জলসা, আওর ইস মেহফিল মে মউজুদ মেরি ওয়ালিদ সাব কা, দীগর বুযুর্গুঁকা, তামাম ভায়ুঁ কা আর বেহনুঁ কা, ম্যায় ইসলামী তরীকে সে ইস্তেকবাল করতাহুঁ- আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু!
এখানেও সালামের অপপ্রয়োগ হলো। আর শুনতে মন চাইলো না। লেকচারটা অফ করে কান থেকে ইয়ারফোনটা খুলে নিলাম। 
 
এর কয়েকদিন দিন পরের ঘটনা। একজন প্রকাশক তাদের নতুন বই প্রকাশ উপলক্ষে লাইভে এসেছেন। তিনি আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে কথা শুরু করলেন এভাবে-
'দেশেবিদেশে অবস্থান রত অমুক পাবলিকেশন্সের সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, শুভানুধ্যায়ীবৃন্দ, লেখকবৃন্দ এবং আরো যারা আমাদের ভালোবাসেন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।'
 
সালাম নিয়ে আমাদের সমাজে ঘটে চলা ঘটনাগুলোর সামান্য ক'টি খণ্ড চিত্র এগুলো। এর বাইরেও আরও বহু চিত্র আছে। যেগুলো সালাম নিয়ে আমাদেন জানার কমতি ও বুঝের ঘাটতি থাকার কথাই প্রমাণ করে। 
 
প্রথম ঘটনায় সেই মুরুব্বিকে আমি আগে সালাম দিয়েছিলাম। তিনি উত্তর নিলেন। ব্যাস, হয়ে গেলো। কিন্তু উনি উত্তর নিয়ে পরে আবার পাল্টা যে সালাম দিলেন এটি হলো ভুল প্রথা। সুন্নাহ একে সমর্থন করে না। সুন্নাহ যেটা বলে সেটা হলো, একজন সালাম দিবে অন্যজন তার উত্তর দিবে। ব্যাস, এটুকুই। সালামের উত্তর নেওয়ার পর পুনরায় পাল্টা সালাম দেওয়ার রীতি সুন্নাহসম্মত নয়।
 
 
এমন ঘটনার সম্মুখীন আমি এর আগেও বহুবার হয়েছি। মোবাইলে সালাম দিয়েছি তো ওপাশের মানুষটি সালামের উত্তর নিয়ে পাল্টা নতুন করে আবার আমাকে সালাম দিয়েছে। এমনটা করার কারণ হলো, অনেকেই মনে করে সালাম যেহেতু অন্যকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম তাই অন্যজন আগে সালাম দিয়ে ফেললেও পুনরায় ঘুরিয়ে তাকে সালামটা জানিয়ে দিতে হবে। নইলে যথাযথ সম্মান জানানো হয় না। অথচ প্রকৃত বিষয়টি তেমন নয়।
 এটি কেবলই আমাদের মনগড়া একটি বিশ্বাস।
আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, মূল সালাম ও তার জবাবের বাক্য হুবহু একই রকম বলা যায়। পার্থক্য শুধু এতোটুকু যে, মূল সালামের বাক্যে আলাইকুম কথাটা পরে থাকে কিন্তু জবাবের মধ্যে তা আগে চলে আসে। দেখুন- আসসালামুআলাইকুম এর উত্তর হলো ওয়ালাইকুমুসসালাম। তো দেখা গেলো, অর্থও উভয়টার একই রকম ধরা যায়। ফলে এমনটা ভাবার কোন যৌক্তিকতা নেই যে, সালামের মধ্যে এমন কিছু আছে, যা উত্তরের মধ্যে নেই।যার ফলে আপনাকে উত্তর নিয়ে পুনরায় সালাম শুরুর বাক্যটা শুনিয়ে দিতে হবে। 
 
 
এবার আসি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনাতে। এই বিষয়টার ছড়াছড়ি আমাদের সমাজে এতো বেশি যে, একে মহামারি পর্যায়ের সমস্যা বললেও অত্যুক্তি হবে না। ধর্মীয়
মাহফিল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বক্তৃতার মঞ্চ কোনটাই এর থেকে মুক্ত নয়। বক্তা প্রথমে উপস্থিত ব্যক্তিদের বিভিন্ন বাক্যে সম্বোধন করে সব শেষে সালাম দেয়। এটা সুস্পষ্টভাবে হাদীসের নির্দেশনার খেলাফ। হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'আগে সালাম পরে কালাম।' [১] তাই প্রথমেই সালাম দিয়ে তারপর অন্যান্য কথা বলা উচিত। নইলে শুরুতেই সালাম থাকার সুন্নাহটি আদায় হয় না। 
 
 
সালাম কে কাকে দিবে সেই বিষয়েও হাদীসে নির্দেশনা রয়েছে। এই বিষয়ে কয়েকটি হাদীসের উপর নজর বুলানো যাক। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'আরোহী পদচারীকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক অধিক সংখ্যককে সালাম দিবে। [২]
 
আমি অনেক বছর আগে আলিয়া মাদরাসায় পরীক্ষা দেবার জন্য একবার ভর্তি হয়েছিলাম। যদিও পরে আগ্রহ অনুভব না হওয়ায় বাদ দিয়েছিলাম। তো ভর্তি হবার পরে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ আমি ক্লাস করেছিলাম সেখানে। দেখলাম, শিক্ষক ক্লাসে আসলে ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই দাঁড়িয়ে সমস্বরে তাকে সালাম দেয়। অথচ এটাও সালাম বিষয়ে হাদীসের নির্দেশনার খেলাফ। সুন্নাহ হলো, যিনি আগমন করবেন তিনি উপবিষ্টদের সালাম দিবেন। দেশসেরা অনেক আলেমের ক্লাসে বসার সুযোগ আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। তাদের দেখেছি, ক্লাসে এসে নিজেরাই শুরুতে সালাম দিচ্ছেন। এটাই হলো সালামের ক্ষেত্রে নববী আদর্শ। 
 
 
ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত একটি হাদীস থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, কোন মজলিসে যিনি আগমন করবেন তিনিই সালাম দিবেন। মজলিসের লোকেরা আগমনকারীকে সালাম দিবে না। হাদীসটি হলো, একজন ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এভাবে সালাম করলো ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জবাব দিলেন। অতঃপর লোকটি বসে গেলে তিনি বললেন, 'তার জন্য দশটি নেকী।' তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে 'আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ' বলে সালাম পেশ করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন এবং লোকটি বসলে তিনি বললেন, 'তার জন্য বিশটি নেকী।' তারপর আরেকজন এসে 'আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ' বলে সালাম দিলো। তিনি তার জবাব দিলেন। অতঃপর সে বসলে তিনি বললেন, 'তার জন্য ত্রিশটি নেকী।'[৩]
 
 
সালাম দিলে কেউ ছোট হয়ে যায় না। এমন না যে, শিক্ষক সম্মানীত ব্যক্তি বলে তিনি সালাম দিবেন না। বরং সালাম কেবল নিবেন। অনেক বয়সে বড়ো ব্যক্তিদের মধ্যেও এই ভুল ধারণা দেখেছি।
তারা কখনোই ছোটদের সালাম দেন না। তাদের থেকে সালাম পাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকেন। বাবা-মা তাদের ছেলেমেয়েদের সালাম দেন না। তারা ধরেই নিয়েছেন যে, ছেলে-মেয়েরাই কেবল তাদের সালাম দিবে। যেহেতু তারা বড়ো ও শ্রদ্ধেয়। এমন ধ্যান-ধারণা লালন করার ফলে সবচে বড়ো যে ক্ষতিটা হয় তা হলো আগে আগে সালাম দেওয়ার যে ফযীলত হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে তা থেকে মাহরূম হওয়া।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'যে আগে সালাম দিবে সে অহংকার থেকে মুক্তি পাবে।'[৪] 
 
সুতরাং যারা আগে সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকেন তারা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। অহংকারের মতো মারাত্মকব্যাধি দূর করার এতো সহজলভ্য প্রতিষেধক থেকে দূরে সরে থাকা যে চরম বোকামি তা তো বলাই বাহুল্য। 
 
ছোটদেরকে সালাম দেওয়ার আমল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবী ও তাবেয়ীদের মধ্যে প্রচলিত ছিলো। অল্পবয়সী বলে তারা ছোটদের সালাম দিতে কখনো কার্পণ্য করতেন না। এই বিষয়ে হাদীসের কিতাবে চমৎকার একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। সাইয়্যার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি সাবিত আল-বুনানী রাহিমাহুমাল্লাহ-এর সাথে হাঁটছিলাম। তিনি কয়েকজন শিশুর পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, কোন একদিন আমি আনাস রাদিয়াল্লাহুআনহু-এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। তিনি শিশুদের পাশ দিয়ে চলার সময় তাদেরকে সালাম দিয়েছেন।[৫]
 
 
অনেকে আবার সালামের ক্ষেত্রে পরিচিত-অপরিচিতর তারতম্য করেন। মানে হলো, পরিচিত কেউ হলে তো সালাম দেন। কিন্তু যদি অপরিচিত কেউ হন তখন আর সালাম দেন না। এর পেছনে অবশ্য অন্য আরেকটা কারণও কাজ করে। তা হলো, পরিচিত কেউ হলে তাকে সালাম না দিলে নিজের কাছেই অনেক সময় লজ্জা লাগে। আবার অনেক সময় পরিচিত সেই লোককে সালাম না দিলে তিনি কী মনে করবেন এমন একটা ভাবনাও কাজ করে। কিন্তু অপরিচিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তো আর সেই আশংকা নাই। তাই তাদেরকে সালাম দেওয়ার গরজ অনুভব হয় না।
আমাদের এই মানসিকতাটাও বর্জনীয়। কারণ একবার সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ হতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, 'ইসলামের কোন আমল সুন্দর বা সর্বোত্তম?' জবাবে তিনি বললেন, 'অভাবীদের পানাহার করানো, আর পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম দেয়া।'[৬]
 
 
তাছাড়া কেবল পরিচিতদের সালাম দেওয়া আর অপরিচিতদের সালাম না দেওয়াটাকে হাদীসে কিয়ামতের আলামত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কেয়ামত যতো নিকটে ঘনিয়ে আসছে এর বাস্তবতা ততো প্রস্ফুটিত হচ্ছে। ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহুআনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সূত্রে বর্ণনা করেন, 'কিয়ামতের একটা আলামত হলো, একজন মানুষ আরেকজন মমানুষকে কেবল পরিচিতির সূত্র ধরেই সালাম দিবে।'[৭]
 
 
পরস্পরে সাক্ষাৎ হলে সালাম দেওয়ার অভ্যাস যাদের আছে তাদের মধ্যেও একটা বিষয়ের কমতি দেখা যায়। তা হলো, ঘরে প্রবেশ করার সময় সালাম না দেওয়া। অথচ এটি ঘরে বরকত আনয়নের একটা মাধ্যম। যেমন, এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'তুমি যখন তোমার পরিবার-পরিজনের নিকটে যাও, তখন সালাম দিও। তাতে তোমার ও তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য তা বরকত হবে।'[৮] 
 
 
তবে সালামের যে বিষয়টি আমার সবচে ভালো লাগে তা হলো, সালামের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা-সৌহার্দ্য জন্ম নেয়। আপনি নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। যার সাথে আপনার মনোমালিন্য রয়েছে সামনাসামনি হলেই তাকে সালাম দিতে ভুলবেন না। দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যেই দু'জনের মধ্যে একধরনের প্রীতিবোধ তৈরি হয়ে যাবে। সে হিসেবে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে সালাম একটি মোক্ষম প্রতিষেধকই বলা যায়। হাদীস থেকেও বিষয়টি প্রমাণীত। 
 
আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহুআনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায়, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ঈমানদার ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বলে দিব না, কি করলে তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে।'[৯]
তবে অনেকের অভিযোগ থাকতে পারে যে, আমি তো নিয়মিত সালাম দেই কিন্তু এসব ফায়দা তো পাই না। আসলে সালামের ফায়দা থেকে বঞ্চিত হবার একটা বড়ো কারণ হচ্ছে বিশুদ্ধভাবে সালাম না দেওয়া। আজকাল মানুষজন দায়সারা গোছের সালাম দিয়ে থাকে। যেন কোন মতে একটা বাক্য উচ্চারণ করে দায় শেষ করাই থাকে উদ্দেশ্য। 
 
 
সালামের ক্ষেত্রে মানুষ বেশি ভুল করে থাকে যেসব জায়গাতে তা হলো, শুরুর হামযাহকে হটিয়ে দিয়ে স্লামালাইকুম
বলা। অথবা সীন ও লামকে এক সাথে মিলিয়ে আস্লামুআলাইকুম বলা। এগুলোর কোনটিই ঠিক নয়। বিশুদ্ধ সালাম হলো, শুরুর হামযাহকে বহাল রেখে সীন ও লামকে আলাদা করে উচ্চারণ করা- আসসালামুআলাইকুম। 
 
সালামকে বিকৃত করা মূলত অভিশপ্ত জাতি ইহুদিদের স্বভাব। হাদীসের কিতাবে পাওয়া যায়, একবার একদল ইহুদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, 'আস-সামু আলাইকুম!' অর্থাৎ তোমার মরণ হোক। আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহুআনহা উত্তরে বললেন, 'তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পড়ুক।'
 
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়িশাহ, একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমাদের কর্তব্য। রূঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন করো।' 
 
আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহুআনহা বললেন, 'তারা যা বলেছে তা কি আপনি শোনেন নি?'
তিনি বললেন, 'আমি যা বললাম, তুমি কি তা শোনো নি? কথাটি তাদের উপরই ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তাদের ব্যাপারে (আল্লাহর কাছে) আমার কথাই কবুল হবে আর আমার সম্পর্কে তাদের কথা কবুল হবে না।'[১০]
 
 
এই কারণে সালাম দেওয়ার সময় সতর্ক থাকা উচিত আমাদের। যাতে করে উচ্চারণ বিকৃতির মাধ্যমে এর অর্থ পরিবর্তন না হয়ে যায়। তাছাড়া এটা যেহেতু ইহুদীদের স্বভাব তাই এর থেকে যতো বেশি দূরে থাকা যায় ততোই মঙ্গল। 
 
সালামের অনেক অনেক ফযীলত আছে। এসব ফযীলতের জযবায় অনেকে আবার জায়গায়-অজায়গাতেও সালাম দিয়ে বসে থাকেন। তার মধ্যে একটা হলো মসজিদের ভেতর উচ্চস্বরে সালাম দেওয়া। মসজিদ হলো ইবাদতের স্থান। এখানে মানুষজন নামাজে-তিলাওয়াতে ও যিকির-আযকারে মগ্ন থাকে। জোরে সালাম দিলে তাদের মনোযোগ নষ্ট হওয়ার সমূহ আশংকা থাকে। তাই মসজিদের অভ্যন্তরে জোরে সালাম দেয়া যাবে না। একান্ত সালাম দিতে চাইলে যারা চুপচাপ বসে আছে তাদের কাছে ক্ষীণ আওয়াজে দেয়ার অবকাশ আছে।[১১]
 
 
আসুন, আমরা বেশি বেশি সালাম প্রদান করি। সালামের প্রচলন ঘটাই। সালাম দিতে যে কার্পণ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শ্রেষ্ঠ কৃপণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।[১২] তাই কৃপণ হওয়া থেকে বাঁচতে চাইলে সালামে অভ্যস্ত হওয়ার বিকল্প নেই।
-------------------------------------
♦ তথ্যসূত্র:
১. তিরমিযী: ২৬৯৯ ; সনদ হাসান।
২. সহীহ বুখারী: ৬২৩২
৩. তিরমিযী ২৬৮৯, আবূ দাউদ ৫১৯৫
৪. শুআবুল ঈমান, বাইহাকী: ৮৪০৭; সনদে কিছুটা দুর্বলতা আছে।
৫. সুনান আত-তিরমিযী: ২৬৯৬; সনদ সহীহ
৬. আবু দাউদ- ৫১৯৬
৭. মুসনাদে আহমাদ: ৩৮৪৮; হাসান
৮. সুনান তিরমিযী: ২৬৯৮; যঈফ
৯. সহিহ মুসলিম: ৯৮
১০. সহীহ বুখারী: ৬০৩০
১১. ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩২৫, ফাতাওয়ায়ে বাজ্জারিয়া :৩/৩০০, আপকে মাসাইল আওর উনকা হল :৮/১৫৭
১২. আলমুজামুল আওসাত, তাবারানী: ৫৫৯১
 
Post link HERE https://www.facebook.com/Umm-Maryams-Diary-1597989236960711/?__cft__[0]=AZWw0l_uGd8dL8funQna1l2alQ8HrAFBygxPBuHorWn2arQMkf0IPVOwOI8edMvsIKsjSoPCcKId8jUs73AmppjyBmgFFTEioFTLYx7UaqA2U6g0W0e9KlUhgHgJfa13pRaiQb1wVVbL2DDcZJaePluwjFbGoDfGIuryifogOenoyXa9kbxm34LUXPKJ2f8vrn4&__tn__=-UC%2CP-R

যুবকদের ভিতরে ঈমান উজ্জীবিত করার কোন দায়িত্ব পিতামাতা পালন করেন না।


চার পাঁচ বছর পর্যন্ত খুউব আদর করেছে।
সাত আট বছরে স্কুলে ছেড়ে দিয়েছে।
বারো তেরো বছরে আর কোন খোঁজই নেয়না।
কি জানে? "আমার ছেলে পড়ে" কে বন্ধু? মসজিদে যায় কিনা? নামাজ পড়ে কিনা? কোন খোঁজ নেয়না।

যখন পনের, ষোল, সতের, আটারো বছর বয়স হয় বাবাও জানে, মাও জানে-'আমার ছেলের অমুক মেয়ের সাথে Affair আছে'। কি যেন বলে? -রিলেশন আছে। শোনেন না এগুলো? মা বাবা জানে না? জানে।

মেয়ের বাবাও জানে, ছেলের বাবাও জানে। মেয়ের মাও জানে, ছেলের মাও জানে যে, 'এই বয়সে তো একটু কিছু হবেই'। এটাই তো কথা! আচ্ছা,এই যে ছেলে মেয়ে রিলেশন করে, এটা ফরয? না ওয়াজিব? না সুন্নাত? নাকি মুস্তাহাব? এটা কি?

- হারাম!

এই হারাম কাজ যদি কেউ মেনে নেয়,আউলাদ হারাম করে,আর বলে 'NO PROBLEM, IT’S OK। বড় হলে সেরে যাবে, তার কি ঈমান থাকে?

শরীয়তের পরিভাষায় তাকে বলা হয় 'দাইয়ূস'। এই হলো পিতামাতার অবস্থা।

কিন্তু প্রব্লেম অন্য জায়গায়, ঐ যে যুবক যুবতী, ওদের ভিতরে ঈমান আছে। ওর মা শেখায়নি, বাবা শেখায়নি, বোন শেখায়নি, ভাই শেখায়নি, স্কুলে ঈমান শেখানো হয়না, প্রতিষ্ঠানে নেই, সমাজে নেই, টিভিতে নেই..

তারপরেও -ফিতরাতি, ন্যাচারাল ঈমান ওর(সন্তান)ভিতরে নড়ে। তাইতো, এই যে ছেলে মেয়ের রিলেশন অবৈধ হলে গুনাহ হবে, কিন্তু মন টানে, সম্পর্ক হয়ে গেছে, একে অপরের কাছে আসতে চায়। আবার পাপের ভয়েও বলে:হুজুর? মোবাইলে প্রেম করলে গুনাহ হবে? -হ্যা বাবা,গুনাহ হবে।

:কি করবো? ওরা তখন ঈমানের তাড়নায় কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে। এতকাল হারাম করছিলো, বাবা মা'র কোন আপত্তি ছিলোনা।

বিয়ে করার পরও কি হারাম? নাকি হালাল? 'হালাল'।

এইবার বাবা মা আকাশ পাতাল ভেঙে ফেলে দিবে। যে,"হারাম করছিলি,করছিলি।" "তুই হালাল কাজটা কেন করলি?"

আপনারা হাসছেন??

বড় আফসোস লাগে ভাইয়েরা,বড় আফসোস লাগে।

আমার এক ছাত্র বুয়েটে পড়ে। ইঞ্জিনিয়ার, খুব ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। বাবা মা দ্বীনদার। ওকে হিফজখানায় দিয়েছিল,হাফিজও হয়েছিল। এরপর আলিম পাশ করে বুয়েটে গিয়েছে। দাড়ি আছে। আমার সাথে 'প্রশ্ন উত্তর' শিক্ষার একটা সম্পর্ক আছে। আমাকে বলতেছে-স্যার, এবার ফোর্থ ইয়ার শেষ করবো।
স্যার, এতোদিন পাপের ভয় হতো। খুব চেষ্টা করেছি পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার। এখন পাপ ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু বাড়িতে যদি বিয়ের কথা বলি, মনে হয় যেন আসমান ভেঙে পড়েছে। বুয়েট থেকে অনার্স পাশ করেছে, ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে, এখন বিয়ে কেন?
আরো দশ বছর যাক, তুই আরো ডিগ্রি কর, পিএইচডি কর,প্রতিষ্ঠিত হ। এরপর ৩৫-৪০এ বিয়ে শাদি করবি।

যখন আর বিয়ের দরকারই থাকবেনা! -তাহলে এখন কি হবে? এখন যিনা করবি!

তো এই হলো দ্বীনদার সমজের অবস্থা।
আপনার ছেলে, আপনার মেয়ে বিয়ে করতে চাইলে আপনার কষ্ট লাগে।আর ওরা অবৈধ রিলেশন করে,তাতে আপনার কষ্ট লাগেনা।
আপনি ইহুদী, খ্রিস্টানদের ষোল আনাই আধিপত্য মেনে নিয়েছেন।
আপনি হয়ত নামাজ পড়ছেন, রোযা রাখছেন, আপনি শবে বরাত করছেন, আপনি হুজুরদের ওয়াজ শুনছেন।
মনে করছেন, 'মাশাল্লাহ', আমি কতবড় মুসলমান। কিন্তু সন্তানের প্রতি দায়িত্বের এই অবহেলায় আপনাকে আল্লাহর কাছে পাকড়াও হতে হবে।
আল্লাহ হেফাজত করুন,আমীন।

-ড. আব্দুল্লাহ জাহাঈীর।(রাহিমাহুল্লাহ)