এই লেখাটি তাদের জন্য যারা ইসলামকে ভালোবাসেন এবং ফেইসবুক বা অন্যান্য সোশাল মিডিয়াতে যারা প্রচুর সময় কাটান।

এই লেখাটি তাদের জন্য যারা ইসলামকে ভালোবাসেন এবং ফেইসবুক বা অন্যান্য সোশাল মিডিয়াতে যারা প্রচুর সময় কাটান।
দয়া করে সবরকম রাজনৈতিক আলোচনা থেকে দূরে থাকুন। এধরণের স্ট্যাটাসে লাইক, শেয়ার, স্মাইলি, বা কমেন্ট দেয়া থেকে বিরত থাকুন। সেটা আপনি দেশেই থাকুন আর বিদেশেই থাকুন। মোটেই ভাববেন না যে বিদেশে থাকলে আপনি খুব সেইফ হয়ে গেলেন এবং যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। আপনার হঠকারী মন্তব্য বা কাজের জন্য শুধু আপনার নয়, অন্যের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে। যে কোনও সময় আল্লাহ্‌র তাকদীর আপনাকে দেশেও ফিরিয়ে আনতে পারে। রাজনৈতিক আলোচনা যারা রাজনীতি করেন তাদের জন্য ছেড়ে দিন। আপনি আদার ব্যাপারি জাহাজ নিয়ে কথা বলতে চান ঠিক আছে, এখন সেসময় নয়।
বরং ইসলামের মৌলিক মেসেজকে মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে মনোযোগী হন। নিজের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে কাজে লাগান। কুরআনের মূল বক্তব্য, আল্লাহ্‌র রাসূলের (সা.) সুন্নাহ্‌, ইবাদাতের আলোচনা - এসবের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি, বরং আগের চেয়ে অনেক বেশি দরকার। আপনার ব্যস্ত জীবনের বেশিরভাগ সময় আপাতত এসব জানার এবং জানানোর ব্যাপারে ব্যয় করুন।
আপনি যদি বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কয়েকটি অপরিপক্ক তরুণের হঠকারী সিদ্ধান্ত আমাদের দেশে ইসলামের মূল আলোচনাকে কতটা কষ্টকর করে দিয়েছে। আরও অদূরদর্শিতা এই অবস্থাকে কেবল নিম্নগামীই করবে।
আল্লাহ্‌র রাসূলের (সা.) সেই হাদীসটি মাথায় রাখুন: "যে আল্লাহ্‌ ও শেষ বিচারের দিনে ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।" আপনার প্রত্যেকটি লাইক, শেয়ার, কমেন্ট, স্ট্যাটাস বা স্মাইলি কিন্তু 'ভালো কথার' সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। এবং ভালো কথা বলতে কেবল ভালো কন্টেন্ট বোঝায় না, সেই কথাটা যথার্থ সময়ে বলা হচ্ছে কিনা, যথার্থ ভাবে বলা হচ্ছে কিনা, জেনে শুনে বলা হচ্ছে কিনা - এসব কিছুই ভালো কথার অংশ।
এটা সেসময় নয় যেখানে আপনি এসপার ওসপার দেখে ছাড়বেন, কোনও একটা দল বাছাই করে আপনি যে হিপোক্রিট নন সেটা প্রমাণ করে ছাড়বেন। এটা আপনার বল্‌স দেখানোর সময় নয়। এটা ইবাদতের টাইম, ধৈর্যের টাইম, প্রজ্ঞার টাইম।
চাকরি করুন, ব্যবসা করুন, পড়াশোনা করুন এবং আল্লাহ্‌র কাছে সালাত ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করুন।


http://tinyurl.com/zynoykk

বাড়াবাড়ি


আল্লাহ প্রদত্ত এই দীনের মাঝে কোন বাড়াবাড়ির স্থান নেই। এটা সবাই জানে, বোঝে। তবে যেটা সবাই বোঝে না, তা হল বাড়াবাড়ির সংজ্ঞা কী হবে, সেটা।
একজন উস্তাদ একবার বলছিলেন, যে বিষয়ে শারি’আহ আমাদের অনুমতি দিয়েছে, সেটা পালন কখনই বাড়াবাড়ি নয়। তাই বাড়াবাড়ি বলতে আমরা কী বুঝি, সেটাই মূল আলোচ্য হওয়া উচিৎ।

যেমন একজন নন-প্র্যাক্টিসিং মুসলিমের কাছে ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়াটা বাড়াবাড়ি। কেন বাবা, নামাজ তো বাসাতেও পড়া যায় – এমন বক্তব্য অনেকেরই। আবার অনেকের কাছে লম্বা ছেড়ে দেয়া দাড়িও বাড়াবাড়ি। আরে চাপ দাড়ি রাখলেই চলে বা দাড়ি না রাখলে ঈমান যাবে না – এমনও বলেন অনেকে। আবার অনেকেই আছেন, যারা বোরকা পরাকে বাড়াবাড়ি মনে করেন। শালীন ড্রেস পরলেই হবে মনে করেন।

আবার অন্য দিকে কিছু প্র্যাক্টিসিং মুসলিমও আছেন, তাদের মাঝেও অনেকে আছেন যারা মনে করেন পায়জামা পাঞ্জাবী পরা বাড়াবাড়ি, নিকাব করা বাড়াবাড়ি, হারাম উপার্জন থেকে বাঁচতে সিম্পল লাইফ লিড করা বাড়াবাড়ি, গায়ের মাহরামের সামনে না যাওয়া বাড়াবাড়ি।

খেয়াল করলে দেখা যাবে, একেক লেভেলের মুসলিমদের চোখে বাড়াবাড়িটা একেক রকম। শীলা মনে করছে নীলা মাথায় ওড়না করা হিজাব দিয়েছে এটা বাড়াবাড়ি। আবার নীলা মনে করছে শায়লা ওড়না হিজাবের সাথে আবার কালারফুল বোরকা পরেছে এটা বাড়াবাড়ি। আবার শায়লা মনে করছে আমিনা কালো বোরকা পরেছে এটা বাড়াবাড়ি। আবার আমিনা মনে করছে আইশা নিকাব পরেছে এটা বাড়াবাড়ি। একেক জনের কাছে বাড়াবাড়ির সংজ্ঞা একেক রকম।
অথচ শরিয়তের মানদন্ডে কোনটাই বাড়াবাড়ি নয়, বরং প্রথম কয়েকজনের অনেক কিছুই ছাড়াছাড়ি। শরিয়ত যা আমাকে করতে অনুমতি দিয়েছে, হক্কপন্থী ফকিহ আলিমগণ যে বিষয়ে মতামত দিয়েছেন, তার অনুসরণ কখনই বাড়াবাড়ি নয়।

তার মানে কি বাড়াবাড়ি কিছুই নেই?
 হ্যাঁ আছে।
 অনেক হক্কপন্থী আলিমই বর্তমান যুগে অনেক কিছুকে বাড়াবাড়ি বলেন। যেমন ফিকহ নিয়ে, মাসলা মাসাইল নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি করেন, পোশাক পরিচ্ছদের সহজতাকে অস্বীকার করে অনেকে বাড়াবাড়ি করেন, শরিয়তের অনুমতি থাকা কোন বিষয়কে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দিয়ে বাড়াবাড়ি করেন, অনেকে অদূরদর্শী হয়ে মানুষ পর্যন্ত হত্যা করেন, এইসব অবশ্যই বাড়াবাড়ি।
এবং এইসব যে বাড়াবাড়ি, তা শরিয়ত থেকেই প্রমাণিত। ফকিহ আলিমগণ দলিল প্রমাণের ভিত্তিতেই বলেন এইসব বাড়াবাড়ি হবার কারণ।

কিন্তু শরিয়তের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও কোন কিছুকে বাড়াবাড়ি আখ্যা দেয়াটা নিতান্তই অজ্ঞতা, মূর্খতা ও জাহালাত। ইসলাম সহজতার দীন। ইসলাম একে অপরকে সহায়তার, সহানুভূতির ও সহনশীলতার দীন। কেউ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে শরিয়তের অনুমিত পন্থায় আমার চাইতে কোন আমল বেশি করলে, যদিও সেটা আমার চোখে কাঠিন্যের পর্যায়ে পড়ে, সেটাতে আমার আপত্তির কোন সুযোগ নেই। আল্লাহর আইন সে সুযোগ আমাকে দেয় না।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে দীনের জ্ঞান দিন।

>>কালেক্টেড পোস্ট<<