এই লেখা সব মায়েদের জন্য ডেডিকেটেড

কিছু কথা যা সম্ভবত প্রতিটা বাচ্চার মাকে কখনো না কখনো শুনতে হয়-

* বাচ্চাকে ঠিকমতো খাওয়াও না কেন? সাস্থ এমন কেন?
* বাচ্চা বেশিদিন অসুস্থ থাকলে, বাচ্চা এখনো সুস্থ হয়না কেন? ভালোমতো দেখাশোনা করনা?
* বাচ্চা নিয়াও ঘরের সব কাজ করতে হবে। আর মানুষের বাচ্চা নাই? ওদের ঘর দেখো কেমন গুছানো (ইয়ে, মেহমান আসার আগে সবাই ঘর গুছিয়েই রাখে!)
* বাচ্চা ব্যথা পেলে, কেমন মা তুমি বাচ্চাকে দেখে রাখতে পারোনা?
* বাচ্চার কারণে কোন কাজ করতে না পারলে, নিজে কাজ করতে পারোনা বাচ্চার নাম দিওনা।
* বাচ্চা যদি ভুল কিছু করে, কেমন মা তুমি বাচ্চাকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারোনা?
* সাথে বোনাস হিসেবে আছে অযাচিত উপদেশ, বাচ্চাকে এভাবে খাওয়াবেন, এভাবে ঘুম পারাবেন, এভাবে গোসল দিবেন, এভাবে এটা করবেন এভাবে সেটা করবেন! আলহামদুলিল্লাহ মানুষের জ্ঞান দেওয়ার অভাব নাই।যেন মা একাই কিছু জানেনা কিন্তু যার এখনো বাচ্চাই হয়নি সেও মায়ের চেয়ে বাচ্চার ব্যাপারে এক্সপার্ট।

মা অনেক কিছুই ভুল করতে পারে,সঠিকটা জানানো সেক্ষেত্রে অবশ্যই উচিৎ তবে তা এমনভাবে না যেন মা কিছুই জানেনা এবং মায়ের মনে কষ্ট দেয়।সুন্দর করে বলা যায়,আচ্ছা আপু আপনি তো এভাবে করেন,অমুক ভাবে করে দেখবেন ইন শা আল্লাহ আরও ভালো ফল পাবেন।

উপরে যা বললাম এসব আসলে মায়েদের যেসব কথা শোনা লাগে তার মাত্র ১০%। হ্যা মাত্র ১০%! বাচ্চা যত বড় হতে থাকবে বাচ্চার প্রতিটা ভুলের জন্য মা দায়ি। মা ছাড়া যেন সবারই বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা বেশি।মা শুধু জন্ম দিবে, দুধ খাওয়াবে আর উলটাপালটা বাচ্চা পালবে!

এখন আসি ইসলামে মায়ের মর্যাদার উপর কি বলে। এই হাদিসটা আমরা সবাই জানি সন্তানের উপর মায়ের অধিকার তিনবার বলার পরে বাবার অধিকার। আর বাকিদের কথা তো তাহলে বাদই দিলাম।আল্লাহ যেখানে বাবাকেও মায়ের অধিকারের চেয়ে অনেক কম অধিকার দিয়েছেন তাহলে নিশ্চয় কোন কারণ আছে।মায়ের অধিকার এতো বেশি কেন? একজন মা তার বাচ্চাকে যেভাবে ভালোবাসে, যেভাবে বাচ্চার ভালো চায় তার ধারের কাছে দুনিয়ার কেও চাইতে পারেনা।আই রিপিট,কেও চাইতে পারেনা।
 বাচ্চার কোন সমস্যা হলে মা বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলে, বাচ্চার অসুস্থতাতে মা যেভাবে ব্যাকুল হয়ে রাত জেগে সেবা করে,আল্লাহর কাছে দুয়া করে সেভাবে কি আর কেও পারবে? এজন্যেই আল্লাহ সন্তানের জন্য মায়ের দুয়া দ্রুত কবুল করেন।আর কারও দু আ কি এভাবে দ্রুত কবুল হয় সব সময়? আর কার পায়ের নিচে আল্লাহ সন্তানের বেহেস্ত রেখেছেন? এতো বড় মর্যাদা কি আল্লাহ এমনি দিয়েছেন?

একজন মুসলিম মা তার সন্তানকে আল্লাহ প্রদত্ত আমানত হসেবে দেখে।ভালোবাসার পাশাপাশি আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর জন্য তৈরি করা তার দায়িত্ব। যে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাকে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। সেই মা নিশ্চয় কখনোই নিজের অক্ষমতাকে সন্তানের নামে চাপিয়ে দিবেনা। নিশ্চয় সে তার সন্তানের ব্যাপারে অবহেলা করবেনা। কিন্তু তবুও মায়েদের কথা শোনা লাগে। আমাদের মায়েদেরওশুনতে হয়েছে,তাদের মায়েদেরও, তাদের মায়েদেরও। যুগ যুগ ধরে সব দোষ সব ভুল শুধু মায়েদেরই, আর মা ছাড়া সবাই বাচ্চাকে বেশি ভালোবাসে!! এমনকি যারা এই অবস্থা ফেইস করেছেন তারাও অন্য মায়েদের খোঁটা দিয়ে থাকেন!

বাচ্চা নিয়ে মাকে কথা শোনানোর আগে একবার ভাববেন যে যাকে বলছেন সে বাচ্চার মা।৯ মাস বাচ্চাকে পেটে নিয়ে সে কষ্ট করেছে, বাচ্চার জন্য রাতের পর রাত জেগেছে, নিজের শখ আহ্লাদ, সুবিধা,ইচ্ছা সব বাদ দিয়েছে সন্তানের ভালোর জন্য।সন্তান জন্মের পর আপনি তার বাবা, মামা, খালা, দাদা দাদি নানা নানি ইত্যাদি হয়েছেন।কিন্তু বাচ্চা পেটে আসার সাথে সাথেই মা মা হয়েছেন। ভুল করলে অবশ্যই সঠিকটা ধরিয়ে দিবেন তবে তা মাকে মা হিসেবে সম্মান করে। বাচ্চার কেয়ারটেকার হিসেবে না।

[এই লেখা সব মায়েদের জন্য ডেডিকেটেড। আমি লিখেছি বলে আবার এটাকে আমার ঘরের চিত্র ভাববেন না। আমি সবার থেকে দূরে একা থাকি।তবে এমন মা খুঁজে পাওয়া যাবেনা যাকে কারও থেকে কথা শুনতে হয়নি।সেটা পাশের বাসার অবিবাহিত পিচ্চি মেয়ে হলেও হতে পারে!!]
>>কালেক্টেড পোস্ট<<

No comments:

Post a Comment

Plz spread this word to your friends