আল্লাহ ক্ষমাশীল, তবে ন্যায়বিচারকও বটে |

আমার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের বেশিরভাগের জন্মই মুসলিম পরিবারে। সবাই কমবেশি ইসলামের বেসিক রুলগুলো জানেন।

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রমাদানের রোজা, নারীদের জন্য হিজাব, পুরুষদের জন্য দাড়ি, নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশা ও বন্ধুত্ব না করা, গান-মুভি-সিরিয়াল না দেখা, সামর্থ্য থাকলে যাকাত আদায় ও হজ্জ্ব পালন--এই কাজগুলো ইসলামের একেবারেই বেসিক এগুলো সবাই জানেন। এছাড়াও মিথ্যা না বলা, সুদ-ঘুষ না নেওয়া, কথা দিয়ে কথা রাখা- এই বিষয়গুলো তো আমাদেরকে ছোটোবেলা থেকেই শেখানো হয়। অথচ মানে কজনা!

মুসলিম হয়ে বড়ো হয়ে ওঠা বেশিরভাগ লোকই এখন এসব মেনে চলছেন না। এমনকি মানার চেষ্টাও তাদের মধ্যে নেই।

মানার চেষ্টা নেই - কীভাবে বুঝি?

যখন দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়াশোনা, আড্ডা, সিনেমা বা খেলা দেখার জন্য ব্যয় করা হচ্ছে, কিন্তু সঠিক সময়ে সালাত আদায় করা হচ্ছে না। "সময় পাই না" এক্ষেত্রে খোড়া যুক্তি বলাই বাহুল্য!

অফিস, জার্নি, বাচ্চাদের স্কুল বা ফাংশনের জন্য ভোরবেলায় উঠে যেরে পারছেন, কিন্তু ফজরের সালাতটা নিয়মিত মিস হচ্ছে। "ঘুম ভাঙতে চায় না" কথাটা এক্ষেত্রে ফালতু অজুহাত ছাড়া আর কিছু?

এরকম আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে, অত উদাহরণ দিয়ে লেখাটা বড়ো আর বিরক্তিকর করতে চাই না, সহজ কথা হলো- আমরা যদি নিজেদের সাথে ধোকাবাজি না করি, তাহলে বুঝতে পারবো বেসিক এই ইবাদতগুলোর ব্যাপারেও আমরা কত্তো উদাসিন! বড়ো বড়ো কঠিন ইবাদতের কথা নাহয় বাদই দিলাম, ইসলামের ন্যূনতম কাজগুলিও আমরা ঠিকমত করতে চাই না। আমাদের অন্তর থেকে যেন আখিরাতের ভয়, বিশ্বাস উঠে গেছে! অথচ মুখে বলছি আমরা আখিরাতে বিশ্বাস করি, আমরা মুসলিম....

ইসলাম সম্পর্কে আমরা অনেকেই কম জানি এটা সত্যি, কিন্তু অজ্ঞতা আমাদের জন্য যতোটা না সমস্যা, তারচেয়েও বড়ো পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জ্ঞান! আমরা অনেক কিছুই জানি, জেনেও মানছি না। আমাদের সমস্যা আমরা আল্লাহকে ভয় পাচ্ছি না। আমরা আখিরাতের কথা ভুলে যাচ্ছি। আল্লাহর দেয়া বিধানগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছি, এমনকি পরদিন থেকে মানার নিয়ত পর্যন্ত করছি না! অনেকে তো এটাও বলেন যে, মন থেকে আসলে করব, বা আল্লাহ যেদিন আমার মন বদলায় দিবেন সেদিন সবই করব। সুবহান আল্লাহ! আল্লাহ তার অন্তরই বদলান, যে নিজে আল্লাহর দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। নিজের মনে ভালো কাজের নিয়্যত করুন, আল্লাহকে ভয় করুন, আল্লাহ তা'আলার কাছে সাহায্য চান এবং ইসলাম পালনে আপনার চেয়েও এগিয়ে থাকা লোকদের সাথে বেশি সময় কাটান। দেখবেন আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেই করবে।

আখিরাতে আমাদের বিশ্বাস কতোখানি এটা আসলে প্রমাণ হয় আমাদের কাজের মাধ্যমে। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের কাজ, ইবাদত, আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। ইসলামের হুকুমত জেনেও সেগুলো কেন মানি নাই জিজ্ঞেস করবেন। আমরা সেদিন কী জবাব দেব? আল্লাহর কাছে কি আমাদের জবাব গ্রহণযোগ্য হবে? মনে রাখতে হবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, তবে আল্লাহ ন্যায়বিচারকও বটে। টগবগে যৌবনে যে জন কষ্ট করে ইসলাম পালন করে আর যে লোক সারাজীবন আল্লাহর দ্বীনকে কঠিন বলে এড়িয়ে গেছে, তাদের দুজনের বিনিময় কি কখনও সমান হয়, নাকি সমান হওয়ার?

>কালেক্টেড পোস্ট<

No comments:

Post a Comment

Plz spread this word to your friends